ছবি: সংগৃহীত
'দেশের অন্তত ১০০ আসনে নির্বাচনী ফলাফলের নিয়ামক শক্তি সংখ্যালঘুরাই' বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশগুপ্ত।
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, 'তাই কী দেবেন আর কী নেবেন, তার হিসাবনিকাশ নির্বাচনের আগেই পরিষ্কার করতে হবে। তা না হলে নির্বাচনের মাঠে নামা আমাদের দ্বারা সম্ভব হবে না।'
শনিবার ঐক্য পরিষদের ঢাকা মহানগর উত্তরের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, 'সংসদ নির্বাচন যতোই ঘনিয়ে আসছে, দেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ ততোই বাড়ছে। কারণ নির্বাচনের পূর্বাপর সময়ে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সম্প্রতি নিয়মে পরিণত হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'অথচ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় সংখ্যালঘু সুরক্ষা বিশেষ আইন প্রণয়নসহ সরকারের কোনো নির্বাচনী অঙ্গীকারই এখন পর্যন্ত পূরণ করা হলো না।'
ঐক্য পরিষদের মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অতুল চন্দ্র মণ্ডলের সভাপতিত্বে তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এই বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হৃদয় গুপ্তর সঞ্চালনায় বর্ধিত সভায় বক্তব্য রাখেন ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার রায়, অধ্যক্ষ হরিচাঁদ মণ্ডল সুমন, কিশোর রঞ্জন মণ্ডল প্রমুখ।
রাণা দাশগুপ্ত বলেন, 'আমরা ভারতেরও দালাল নই, আওয়ামী লীগেরও দালাল নই, কোনো রাজনৈতিক শক্তির দালাল নই। আমরা বাংলাদেশের দালাল। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার—মুজিবনগর সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের এই আদর্শকে ধারণ করে এ দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরাই সবচেয়ে বেশি জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়ে বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছে।'
'কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, যে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে আমরা মুক্তিযুদ্ধে ত্যাগ স্বীকার করলাম, স্বাধীনতার অর্ধশতক পরে এসে আমরা দেখছি, এই রাষ্ট্রে স্বাধীনতার সেই তিন লক্ষ্যই হারিয়ে গেছে। রাষ্ট্র হয়ে গেছে বৈষম্যমূলক আর সাম্প্রদায়িক।'
'বাহাত্তরের সংবিধান হারিয়ে গেছে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, বঙ্গবন্ধুর আদর্শই আজ এই রাষ্ট্রে পরাজিত। রাষ্ট্রধর্ম প্রবর্তনের মাধ্যমে আমাদেরকে আজ এই রাষ্ট্রে সংখ্যালঘুতে পরিণত করা হয়েছে।'
'বাংলাদেশকে হিন্দু শূন্য করার রাজনৈতিক নীলনকশা চলছে। এই দেশ থেকে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী যদি হারিয়ে যায়, তাহলে বাংলাদেশ পরিণত হবে আফগানিস্তানে।'
আগামী ২২-২৩ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৪৮ ঘণ্টার গণঅনশন ও গণঅবস্থান এবং ৬ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মহাসমাবেশ সফল করার আহ্বান জানান ঐক্য পরিষদের নেতারা।
আর.এইচ/ আই.কে.জে
খবরটি শেয়ার করুন