নিজস্ব প্রতিবেদক, সুখবর ডটকম: আগামী ২৬ জানুয়ারি দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল এমআরটি-১-এর নির্মাণকাজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্প পরিচালক আবুল কাশেম ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
তিনি জানান, পরে পূর্বাচলের ১০৪ নম্বর সড়কে জনতা উচ্চ বিদ্যালয়-সংলগ্ন রাজউকের মাঠে এ উপলক্ষে জনসভার আয়োজন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে এই অনুষ্ঠানে।
২১ স্টেশন বিশিষ্ট ৩১ দশমিক ২৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের প্রথম ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেলের জন্য এরই মধ্যে পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের রয়েছে দুটি অংশ। একটি বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর (পাতাল), ১২ স্টেশনের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৮৭২ কিলোমিটার। অন্যটি নতুন বাজার থেকে নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জ পর্যন্ত। এই উড়াল পথের দৈর্ঘ্য ১১.৩৬৯ কিলোমিটার। স্টেশন সংখ্যা ৯টির মধ্যে ৭টি ওপরে থাকবে। ২০২৬ সালের মধ্যে ১২ প্যাকেজে শেষ হবে নির্মাণ কাজ। নির্মাণ শেষে প্রতিদিন ৮ লাখ যাত্রী পরিবহন সম্ভব হবে। এই প্রকল্পে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা।
প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২৫টি ট্রেনে যাত্রী পরিবহন করা হবে। ৮ বগির ট্রেনগুলোর ধারণ ক্ষমতা ৩ হাজার ৮৮ জন। ২৪ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর, কমলাপুর থেকে ৪০ মিনিটে পূর্বাচল এবং ২০ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডে নতুনবাজার থেকে পূর্বাচলে যাবে ট্রেন। যানজট ও দূষণ নিরসনে রাজধানী ও সংলগ্ন এলাকায় নির্মিতব্য ৬টি লাইনের মধ্যে দ্বিতীয়টি হবে এমআরটি-১। ২০৩০ সালের মধ্যে নির্মাণ করা হবে ৬টি মেট্রো লাইন।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর এই প্রকল্পের কাজ শুরুর কথা ছিল। বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, মূলত কোভিডের কারণেই কাজ শুরু হতে বিলম্ব হয়েছে। সব প্রস্তুতি শেষে এখন আমরা কাজের দিকে যাচ্ছি। ২০২৬ সালের মধ্যে পুরো কাজ শেষ হবে বলে আশা করি।
প্রকল্পের নথি বলছে, এমআরটি-১-এর ডিপো নির্মাণে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ৯৪০ কোটি টাকায় প্রায় ৯৩ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ৩১ শতাংশ জমির দখল বুঝে পেয়েছে মেট্রোরেলের নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সরকারি কোম্পানি ডিএমটিসিএল। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকি জমি মেট্রো কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। মাটি ভরাটের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ২৬ জানুয়ারি নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
সরকার ও জাপানি সহযোগিতায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা ঋণ দেবে। বাকি ১৩ হাজার ১১১ কোটি টাকা জোগান দেবে বাংলাদেশ সরকার।
গত ২৩ অক্টোবর ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) নির্মাণ তদারকি পরামর্শদাতা হিসেবে নিপ্পন কোই কোম্পানি লিমিটেডের (জাপান-জেভি) সঙ্গে চুক্তি সই করে। এ প্রতিষ্ঠান তাদের সেবার জন্য পাবে মোট ১ হাজার ৫১৭ দশমিক ২৪ কোটি টাকা।
এম/ আই. কে. জে/
আরো পড়ুন:
নতুন বছরে বাড়ছে রেমিট্যান্স প্রবাহ