ডেস্ক রিপোর্ট, সুখবর ডটকম: সহস্র বছর ধরে এখনো দাঁড়িয়ে আছে প্রাচীন রোমানদের তৈরি অনেক স্থাপনা। কত সাম্রাজ্যের পতন এবং কত যুদ্ধ প্রত্যক্ষ করে সে সময়কার প্রকৌশলী এবং স্থপতিদের প্রতিভার সাক্ষ্য দিচ্ছে এসব স্থাপনা। তবে এসব স্থাপনা ঠিক কোন উপাদানে নির্মিত হয়েছিল? কিভাবে এত বছর পর এসেও এগুলো ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে, তা মানুষের কাছে এখনো অজানা।
অবশেষে গত ৬ জানুয়ারি, শুক্রবার, সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় এ রহস্যের উত্তর পাওয়া গিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি এবং সুইজারল্যান্ডের গবেষকদের ধারণা মতে, এসব স্থাপনা নির্মাণে কংক্রিটের সাথে এমন একটি উপাদান যুক্ত করা হয়েছে যে উপাদান স্ব নিরাময়বৈশিষ্ট্যযুক্ত, অর্থাৎ এ উপাদান ব্যবহারের ফলে কংক্রিটে কোনোরূপ ফাটল ধরবে না।
উদাহরণ হিসেবে তারা প্যানথিয়নের প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন, প্রায় ২,০০০ বছর পর এসেও এ স্থাপনা বিশ্বের সবচেয়ে বড় গম্বুজ হিসেবে টিকে আছে।
গবেষকরা ইতালির প্রিভারনামের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানের একটি প্রাচীর থেকে ২০০০ বছরের সংগৃহীত পুরানো কংক্রিটের নমুনা বিশ্লেষণ করে দেখেছেন এ কাঠামো রোমান সাম্রাজ্যের সময়কার কংক্রিটের কাঠামোরই অনুরূপ।
ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি) এর নেতৃত্বে একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, কংক্রিটের স্থায়িত্ব এবং স্ব-নিরাময় বৈশিষ্ট্যগুলো এর উপাদানগুলো থেকে এসেছে এবং এসেছে পোজজুলি থেকে, যার মাধ্যমে পাওয়া যায় পোজোলানা। এটি মূলত আগ্নেয়গিরির ছাই এবং চুনের মিশ্রণ।
গবেষণা অনুসারে, জলের সাথে মিশে গেলে এ উপাদানগুলো একত্রিত হয়ে একটি শক্তিশালী কংক্রিট তৈরি করে। তখনকার প্রকৌশলীরা এর কার্যকারিতা সম্পর্কে জানলেও তারা সম্ভবত জানত না যে এটি হাজার হাজার বছর স্থায়ী হবে।
গবেষক দলটি আরো দেখেছে যে, রোমান স্থাপত্যের পৃষ্ঠের সাদা সাদা অংশগুলো আধুনিক কংক্রিটে না পাওয়া গেলেও, এটি কংক্রিটেরই সংমিশ্রণে গঠিত এবং চুন থেকে উদ্ভূত। এর নাম লাইম ক্ল্যাস্ট।
গবেষকদের ধারণা, তখনকার প্রকৌশলীরা তাদের স্থাপনায় কুইকলাইম ব্যবহার করেছেন। এটি চুনাপাথরের সবচেয়ে প্রতিক্রিয়াশীল একটি রূপ। তারপর চুনাপাথরকে উত্তপ্ত করে পানির সাথে মিশিয়ে স্লেকড চুন বা ক্যালসিয়াম হাইড্রক্সাইড তৈরি করে। এগুলোকে পোজোলোনার সাথে মিশিয়ে তারা ব্যবহার করেছিলেন।
আই.কে.জে/