নিজস্ব প্রতিবেদক, সুখবর ডটকম: বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা, সত্তরের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় এবং একাত্তরের স্বাধীনতা ও জাতির বিজয় অর্জনসহ বঙ্গবন্ধুর নানা ধরনের ইতিহাস গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে দিতে স্টেশনে স্টেশনে ঘুরছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর। সেই ধারাবাহিকতায় রেল জাদুঘরটি বর্তমানে বিরামপুর স্টেশনে অবস্থান করছে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে রেল মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আলাদা দুটি ট্রেন ঘুরে বেড়াচ্ছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন স্টেশনে। গত বছরের ১ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে ইতিহাসসমৃদ্ধ এ দুটি রেল জাদুঘর। বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে লেখা বই কিংবা তাকে নিয়ে লেখা ইসিহাসের বই, সবই শোভা পাচ্ছে এ জাদুঘরে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর পরিহিত কোট, চশমা থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক অনেক কিছুর স্মৃতি আছে চলমান এ রেল জাদুঘরে।
গত শুক্রবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর এসেছে বিরামপুর রেলওয়ে স্টেশনে। বুধবার ট্রেনটি জয়পুরহাট রেলওয়ে স্টেশনে যাবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ভ্রাম্যমাণ এ রেল জাদুঘর দেখতে আসা দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাবরিন জাহান আক্তার জানান, জাতির পিতা সম্পর্কে বইয়ে অনেক কিছু পড়েছি। আবার তার সম্পর্কে নতুন করে জানলাম। এ রেল জাদুঘর দেখে আমার অনেক ভালো লাগছে। শিশুশিক্ষার্থী আয়েশা লাবীবা তুবা জানায়, জাদুঘরে বঙ্গবন্ধু এবং স্বাধীনতা সম্পর্কে অজানা অনেক ছবি ছিল, তা দেখতে পেলাম। খুব ভালো লাগল।
জাদুঘরের পাশাপাশি ট্রেনের পুরো একটি বগিতে ডিজিটাল ডিসপ্লেতে বঙ্গবন্ধুর জন্ম থেকে মৃত্যু শৈশব-কৈশোর এবং সংগ্রামী জীবনসহ স্মৃতিচারণের নানা রকম দৃশ্য দেখানো হচ্ছে। আধুনিক এ ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরে ইতিহাস জানার সুযোগ পাওয়ায় খুশি শিক্ষার্থীসহ নানা বয়সের দর্শনার্থী। মান্নান রহমান নামে ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধ বলেন, সরকার দারুণ একটি উদ্যোগ নিয়েছে। এর মাধ্যমে আমাদের নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশ স্বাধীনতার ইতিহাস এবং এর সঙ্গে জড়িতদের সম্পর্কে জানতে পারবে।
জাদুঘর কর্তৃপক্ষ জানায়, সাত দিন গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলোতে অবস্থান করবে এ রেল জাদুঘর। পর্যায়ক্রমে সারা দেশে ঘুরে বেড়াবে আলাদা দুটি ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর। জানাবে বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার ইতিহাস। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দুই দফায় এ জাদুঘর ঘুরে দেখার সুযোগ পাবেন দর্শনার্থীরা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরের সুপার অ্যাটেনডেন্ট শেখ ফরিদ বলেন, ‘আমাদের এ জাদুঘরে প্রতিদিন অনেক দর্শনার্থী আসে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী বেশি আসে এ জাদুঘরে। আমরা গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলোতে সাত দিন করে অবস্থান করছি।’
বিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান খায়রুল আলম রাজু ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিমল কুমার সরকার রেল জাদুঘরটি পরিদর্শন করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, চমৎকার আয়োজন, অনেক সময় বই পড়ে আমরা সহজেই বুঝি না; কিন্তু বাস্তবে ছবিতে দেখে সহজে উপলব্ধি করতে পারি। নতুন প্রজন্ম এ জাদুঘরের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস জানতে পারছে।
এম/
আরো পড়ুন:
পাটজাত পণ্যকে বর্ষপণ্য ঘোষণা করে গণবিজ্ঞপ্তি