নিজস্ব প্রতিবেদক, সুখবর ডটকম: পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাকরাইন উৎসব আজ। বাংলা পৌষ মাসের শেষ ও মাঘ মাসের শুরুতে পুরান ঢাকাবাসী আয়োজন করে এই উৎসবের। দিনভর সবাই মিলে ঘুড়ি ওড়ানো ও সন্ধ্যায় আতশবাজি, রঙ-বেরঙের ফানুস ওড়ানোর মধ্য দিয়ে উৎসব উদযাপন করা হয় তবে সাকরাইন উৎসবে কোনোভাবেই যেন পুরান ঢাকায় ফানুস না ওড়ে সেই জন্য কঠোর অবস্থানে রয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ফানুস ওড়ানো ও আতশবাজি ফোটানো হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, পুরান ঢাকা রাজধানীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ ও অগ্নি দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা। বিভিন্ন সময় পুরান ঢাকায় লাগা ভয়াবহ অগ্নি দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়েছে সারা দেশ। সাকরাইনকে কেন্দ্র করে ফানুস ওড়ালে বা আতশবাজি ফোটালে পুরান ঢাকায় অগ্নি দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই নগরবাসীকে নিরাপদ রাখতে ফানুস না ওড়ানো ও আতশবাজি না ফোটানোর নির্দেশনা দিয়েছে ডিএমপি।
ডিএমপি সূত্রে আরও জানা গেছে, যদিও ডিএমপির নির্দেশনা অমান্য করে অনেক স্থানীয় বাসিন্দা ফানুস ওড়াবেন বা আতশবাজি ফোটানোর চেষ্টা করবেন। তারা যেন চেষ্টায় সফল হতে না পারে সেই লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ। প্রথমত ফানুস ওড়ানো বন্ধ করার লক্ষ্যে পুরান ঢাকা ও এর আশপাশে এলাকায় গত কয়েক দিন নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করেছে ডিএমপির লালবাগ বিভাগ। এই অভিযানে ফানুস বিক্রি বন্ধ করতে যেমন স্থানীয়দের সচেতন করা হয়েছে, তেমনি জব্দ করা হয়েছে ফানুস ও আতশবাজি।
জানা গেছে, পুরান ঢাকার প্রতিটি মসজিদ থেকে মাইকিং করা হয়েছে যেন সাকরাইন উপলক্ষে ফানুস না ওড়ানো হয়, সেই সঙ্গে আতশবাজি না ফোটানোর অনুরোধও করা হয়েছে। এছাড়া পুরান ঢাকা সংশ্লিষ্ট প্রতিটি থানায় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সাকরাইন উপলক্ষে ফানুস ওড়ানো ও আতশবাজি ফোটানো বন্ধ করতে। তারপরেও যদি কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে থানাগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) জাফর হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, সাকরাইন পুরান ঢাকার একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব। সাকরাইন উপলক্ষে পুরান ঢাকায় বর্ণিল উৎসবের আয়োজন হবে এটি স্বাভাবিক। তবে সাকরাইনকে কেন্দ্র করে পুরান ঢাকায় যেন কোনোভাবে ফানুস উড়ানো অথবা আতশবাজি ফুটানো না হয় সেই বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। কয়েকদিন ধরে পুরান ঢাকায় অভিযান পরিচালনা করে অনেক ফানুস ও আতশবাজি জব্দ করেছি। মসজিদগুলো থেকে মাইকিংও করা হয়েছে। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট থানাগুলোকেও কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে যেকোনো উৎসবে রাজধানীতে ফানুস ওড়ানোর বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া সেল) মো. শাহজাহান শিকদার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ফানুস উড়ানো যাবে কি-না এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্দেশনা দেবে। তবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে আমরা কুইক রেসপন্স করব। উৎসবকে কেন্দ্র করে আমাদের টিম স্ট্যান্ডবাই থাকে সবসময়।
এদিকে থার্টি ফাস্ট নাইটে উপলক্ষেও ফানুস ও আতশবাজিরা বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা ছিল ডিএমপির। কিন্তু ডিএমপির এসব কঠোর নির্দেশনা অমান্য করে রাজধানীতে হাজার হাজার ফানুস ওড়েছিল ও আতশবাজি ফোটানো হয়েছিল। ফানুস ওড়ানোর ঘটনায় গত থার্টি ফাস্ট নাইটে রাজধানীর চার জায়গায় আগুন লাগার ঘটনা ঘট। এছাড়া ওই রাতে ওড়ানো ফানুস গিয়ে পড়ে মেট্রোরেলের বৈদ্যুতিক তার ও রেললাইনে। ফলে ১ জানুয়ারি দুই ঘণ্টা বন্ধ ছিল মেট্রোরেল চলাচল।
আরো পড়ুন:
মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু আজ ঢাকায় আসছেন