সুখবর রিপোর্ট : ষষ্ঠ শ্রেণী থেকেই বাধ্যতামূলক ভোকেশনাল (বৃত্তিমূলক) শিক্ষা চালু হচ্ছে। হাতে-কলমে শিক্ষা দিয়ে নতুন প্রজন্মকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে এই উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণীর প্রতিটি শিক্ষার্থী গ্রহণ করবে এই প্রাক-বৃত্তিমূলক শিক্ষা। এছাড়া নবম-দশম শ্রেণীর প্রত্যেক বিভাগের শিক্ষার্থীকেও নিতে হবে এই শিক্ষা।
পাশাপাশি ভোকেশনাল শিক্ষার বিস্তারে নতুন করে আরও ৬৪০টি প্রতিষ্ঠানে ভোকেশনাল শাখা খোলা হবে। বর্তমানে ১ হাজার ৯৯৩টি প্রতিষ্ঠানে এই শাখা চালু আছে।
মাধ্যমিকে ভোকেশনাল শিক্ষা গ্রহণকারী শিক্ষার্থীদেরকে শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে হাতে-কলমে শিক্ষা নিতে হবে।
এসব উদ্যোগের ফলে পঞ্চম শ্রেণীর পরই একজন শিক্ষার্থীর কারিগরি শিক্ষায় প্রবেশের সুযোগ তৈরি হবে। এতে দক্ষ জনবল তৈরি হবে, যা টেকসই উন্নয়নে সহায়তা করবে বলে মনে করছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা।
এসব পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি সভা হয়। এতে ২০২১ সালে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণীর প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য প্রাক-বৃত্তিমূলক শিক্ষা চালুর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
বৈঠকে আগামী বছর ৬৪০টি প্রতিষ্ঠানে নবম-দশম শ্রেণীতে ভোকেশনাল শাখা চালুর সিদ্ধান্তও হয়।
জানা গেছে, ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণীর ধারাবাহিকতায় সভায় দেশের ৩০ হাজার স্কুল-মাদ্রাসার নবম-দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্যও ভোকেশনালের কমপক্ষে একটি করে ট্রেড চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে ২৭ মে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর এ প্রসঙ্গে বলেন, আগামী বিশ্বে নতুন প্রজন্মের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দক্ষতা। দক্ষতা না থাকলে প্রতিযোগিতাশীল বিশ্বে কেউ টিকে থাকতে পারবে না।
এ কারণে শিক্ষার্থীদের আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ গ্রহণের উপযোগী করে গড়ে তুলতে সরকার প্রতিটি শিক্ষার্থীকে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চায়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, আওয়ামী লীগের রূপকল্প-২০৪১, সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের ইশতেহার এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) আলোকে নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এছাড়া ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতেও সাধারণ শিক্ষা ধারায় কারিগরি ও বৃত্তিমূলক কোর্স চালুর কথা উল্লেখ আছে।
ভোকেশনাল শিক্ষা চালুর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনটি অংশ আলাদা করা হয়েছে- ৬৪০টি মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল-মাদ্রাসায় (নবম-দশম) বৃত্তিমূলক শিক্ষা চালু, নিম্ন মাধ্যমিক (ষষ্ঠ-অষ্টম) পর্যায়ের সব প্রতিষ্ঠানে প্রাক-বৃত্তিমূলক শিক্ষা চালু এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের সব প্রতিষ্ঠানে (সব স্কুল ও মাদ্রাসা) বৃত্তিমূলক শিক্ষা চালু।
ইতিমধ্যে প্রথম দুই অংশের পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে এবং প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু হয়েছে। তৃতীয় অংশের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে আগামী ২৭ মে ফের সভা বসবে। এর আগে একটি কমিটিকে এ ব্যাপারে পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দেয়া হয়েছে।