ডেস্ক রিপোর্ট, সুখবর ডটকম: জার্মানির প্রত্নতাত্ত্বিকরা পোশাকের ব্যবহার শুরু কেমন করে হয়েছে সে বিষয়ে বেশ কিছু প্রমাণ উন্মোচন করেছেন। একটি গুহা ভাল্লুকের থাবার কাটা দাগ থেকে আবিষ্কার করেছেন প্রায় ৩ লাখ বছর আগে প্রাগৈতিহাসিক মানুষেরা গুহা ভাল্লুকের পশম পরত।
উত্তর জার্মানির শোনিনজেনে এই আবিষ্কার রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে। গুহায় বসবাসরত পশমভর্তি এই প্রাগৈতিহাসিক পুরুষ-মহিলারা কী করে প্রথম পোশাক আবিষ্কার করেছিল এবং কী করে নিজেদেরকে শীতের হাত থেকে রক্ষা করত এ বিষয়ে জানতে অনেকেই আগ্রহী।
পশম, চামড়া এবং অন্যান্য জৈব পদার্থ সাধারণত ১ লাখ বছরের বেশি সংরক্ষণ করা যায় না, যার অর্থ দাঁড়ায় প্রাগৈতিহাসিক পোশাকের প্রত্যক্ষ প্রমাণ পাওয়ার সুযোগ খুবই কম।
গুহা ভাল্লুক অনেক বড় প্রাণী ছিল, এর আকার ছিল প্রায় একটি মেরু ভালুকের সমান। তবে প্রায় ২৫ হাজার বছর আগে এই গুহা ভাল্লুক বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে।
তখনকার সময়ে পোশাকের মধ্যে সম্ভবত কোনও ধরনের সেলাই ছাড়া চামড়া ব্যবহৃত হতো, যা শরীরের চারপাশকে আবৃত করে রাখত। কারণ প্রত্নতাত্ত্বিকদের তথ্য মতে, প্রায় ৪৫,০০০ বছর আগে সুঁচের আবিষ্কার সম্ভব নয়।
তাছাড়া জার্মানি শোনিনজেন কাঠের অস্ত্র আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত হয়ে যায়। এখানে প্রাচীনকালে ব্যবহৃত ৯টি নিক্ষেপকারী বর্শা ও দুইটি নিক্ষেপকারী লাঠি আবিষ্কার করা হয়, যা শিকারের সময় শিকারকে হত্যা করতে ব্যবহৃত হতো।
ঠিক কখন পোশাকের ব্যবহার শুরু হয়েছিল তা নির্ণয় করা অত্যন্ত কঠিন।
উকুন সম্পর্কে জেনেটিক স্টাডিজ দেখায় যে, পোশাকের উকুন তাদের মানব মাথার উকুন পূর্বপুরুষদের থেকে অন্তত ৮৩ হাজার বছর আগে এবং সম্ভবত ১ লাখ ৭০ হাজার বছর আগে থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। যা থেকে বোঝা যায় যে আফ্রিকা থেকে বড় স্থানান্তরের আগেই মানুষ পোশাক পরছিল।
সমাধিস্থল পর্যবেক্ষণ করে জানা যায় যে প্রস্তর যুগের লোকেরা হরিণসদৃশ প্রাণী এলক এর দাঁতে আবৃত পোশাক পরত।
বর্তমানে মরোক্কোতে পাওয়া হাড়ের সরঞ্জামগুলো থেকে বোঝা যায় যে মানুষ ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার বছর আগে পশুর চামড়া প্রক্রিয়াকরণ করেছিল।
শোনানজেনে অন্যান্য প্রাণীদের পর্যবেক্ষণ করে বলা যায়, ভাল্লুকের চামড়া অন্যান্য তৃণভোজী প্রাণীদের তুলনায় পোশাকের জন্য অধিকতর উপযোগী ছিল।
তিন লাখ বছর আগে তাপমাত্রা এখনকার মতোই ছিল। তাপমাত্রা আজকের তুলনায় ২ ডিগ্রি উষ্ণ কিংবা ২ ডিগ্রি শীতল- এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।
আই.কে.জে/