নিজস্ব প্রতিবেদক, সুখবর বাংলা: ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিরতার জন্য আমদানিকারকদের দুষলেন ব্যবসায়ীরা। শুধু ইন্দোনেশিয়া ভোজ্যতেল রফতানি বন্ধ করতে যাচ্ছে- এ খবরে দেশের বাজারে প্রতি লিটারে ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে দাম। রেগুলেটরি কমিশনের তদারকির অভাবেই দাম বাড়ানোর কারসাজি হচ্ছে বলে অভিযোগ ক্যাবের।
মাত্র চারদিনের ব্যবধানে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি মণ সয়াবিন অন্তত ১০০ টাকা, পাম ও সুপার সয়াবিনের দাম ৮০ টাকা বেড়ে গেছে। অথচ দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের তেমন কোনো সংকট নেই।
ভোজ্যতেলের দাম নিয়ে চট্টগ্রাম খাতুনগঞ্জ মেসার্স আব্বাস আলী সওদাগরে মালিক আব্বাস আলী বলেছেন, সয়াবিন তেল গত সপ্তাহে ছিল ৫ হাজার ৫২০ টাকা, এ সপ্তাহে এসে হয়েছে ৫ হাজার ৬২০ টাকা। প্রতি মণে সুপার পাম বেড়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা এবং সয়াবিন বেড়েছে ১০০ টাকা পর্যন্ত।
এদিকে রফতানিকারক দেশগুলোতে নানা জটিলতার কারণে ভোজ্যতেলের উৎপাদন কম হওয়ার পাশাপাশি রফতানি কমিয়ে দেওয়ায় বুকিং রেট লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বলে দাবি পাইকারি ব্যবসারীদের। এক বছরের ব্যবধানে প্রতি মণ সয়াবিনের বুকিং রেট ৩০০ মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ১ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলারে ঠেকেছে।
দাম বাড়ার বিষয়ে চট্টগ্রাম খাতুনগঞ্জ মেসার্স আর এন এন্টারপ্রাইজের মালিক আলমগীর পারভেজ বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়লে, আমাদের এখানে বাজার বেড়ে যায়। কারণ এখন অনলাইনের যুগ। এখন বুকিং প্রতিদিন দেখে, প্রতি মিনিটে মিনিটে দেখে সংশ্লিষ্টরা। ফলে তা সঙ্গে সঙ্গে প্রভাব ফেলে। বাড়লে সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে। কমলে সঙ্গে সঙ্গে কমে। ভোজ্যতেলের বাজারটা আমার মনে হয় আরও বাড়ার কারণ হলো, বুকিং বাড়ছে। আবার সামনে রমজান মাস তাই চাহিদা বেশি থাকবে। এদিকে আমাদের মজুদ কম।
একই খুচরা বাজারে সব ধরনের ভোজ্যতেলের প্রতি লিটারের দাম বেড়েছে ৫ টাকা করে। এতে ক্রেতা-বিক্রেতা দুইপক্ষই ক্ষুব্ধ। তারা বলেছেন, গত সপ্তাহে বিক্রি করেছি ১৫০ টাকা লিটার, এ সপ্তাহে ১৫৫ টাকা। দাম সকালে একরকম, আবার পরের দিন অন্যরকম।
এদিকে ক্যাবের দাবি, একদিকে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে দাম বাড়াচ্ছে। অপরদিকে এ সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে সরকারের তদারকি প্রতিষ্ঠানগুলো পুরোপরি ব্যর্থ।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল বাহার সাবেরী বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে যেহেতু ভোজ্যতেলের দাম কমেছে। সেহেতু সরকারি প্রশাসনিক পলিসির মাধ্যমে সেটা কমানো হোক। এবং এখানে যে একটি অপশক্তি কাজ করছে, বিশেষ করে যে সিন্ডিকেট কাজ করছে, তা ভেঙে ভোক্তার স্বার্থে যাতে ন্যায্য মূল্যে ভোজ্যতেল পাওয়া যায়। সেটার একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
দেশে বছরে ১৮ লাখ থেকে ২২ লাখ মেট্রিক টন ভোজ্য তেলের চাহিদা রয়েছে। এর পুরোটাই বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়।
আরো পড়ুন:
ভোজ্যতেলের দাম বাড়বে না কমবে জানা যাবে ৬ ফেব্রুয়ারির পর