ডেস্ক রিপোর্ট, সুখবর ডটকম: ভারত অরুণাচল প্রদেশে এক নতুন মহাসড়ক নির্মাণের চিন্তা করছে, যা ভারত-তিব্বত-চীন-মায়ানমার সীমান্তের কাছ দিয়ে যাবে। চীনের ক্রমাগত অনুপ্রবেশের চেষ্টার মাঝে এ রাস্তা নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং এর নাম রাখা হয়েছে সীমান্ত মহাসড়ক।
মহাসড়কটিকে এনএইচ-৯১৩ এর মর্যাদা দেওয়া হবে এবং এটি অতীতের সব মহাসড়কের তুলনায় দীর্ঘতম হবে। এ রাস্তাটি প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং তাদের সরঞ্জামকে সহজেই সীমান্ত যাতায়াতে সাহায্য করবে। সেইসাথে সীমান্ত এলাকায় অভিবাসীদের প্রবেশ বন্ধ করতেও সাহায্য করবে।
গত ৯ ডিসেম্বর, উত্তর-পূর্ব ভারতের অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ভারতীয় ও চীনা সেনাবাহিনীর সংঘর্ষের ফলে ভারতে তীব্র রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ভারতীয় বিমান বাহিনী চীনা বিমানের বর্ধিত কার্যকলাপ খেয়াল করলে অরুণাচল প্রদেশে সক্রিয় যুদ্ধ টহল শুরু হয়।
বোমডিলা মহাসড়কটির শুরু চিহ্নিত করবে। তারপর রাস্তাটি ভারত-তিব্বত সীমান্তের নিকটতম পয়েন্ট নাফরা, হুরি এবং মনিগং দিয়ে যাবে। চীনের সবচেয়ে কাছের পয়েন্টগুলো যেমন জিডো ও চেনকুয়েন্টির পাশ দিয়েও রাস্তাটি যাবে। অবশেষে এটি ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের কাছে বিজয়নগরে এসে শেষ হবে।
ভারতের সড়ক পরিবহন মন্ত্রী, নীতিন গড়করি অনুমান করছেন যে, এ প্রকল্পে তাদের প্রায় ২৭ হাজার কোটি খরচ হবে, যদিও সরকার এ খরচ কমানোর উপায় খুঁজছে।
এ ব্যাপারে একজন সরকারি কর্মকর্তা জানান, ঐ এলাকায় অন্য কোনও বড় রাস্তা বিদ্যমান না থাকায় প্রায় ৮০০ কিলোমিটার পর্যন্ত সবুজ মাঠই থাকবে। পাশাপাশি কিছু ব্রিজ এবং টানেলও নির্মাণ করা হবে। ২০২৪-২৫ সাল নাগাদ সমস্ত কাজের অনুমোদন শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে এবং সম্পূর্ণ নির্মাণ কাজ শেষ হতে প্রায় দুই বছরের মতো সময় লাগবে।
সড়কটিকে ৯টি প্যাকেজে ভাগ করা হয়েছে। পুরো প্রকল্পটিই ২০২৬-২৭ সাল নাগাদ শেষ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
২০১৬ সালেই, সীমান্ত অবকাঠামো সংক্রান্ত ক্ষমতাপ্রাপ্ত কমিটি প্রাথমিকভাবে একটি জরিপ চালায় এবং একটি বিশদ প্রকল্প প্রতিবেদন (ডিপিআর) প্রস্তুতের সুপারিশ করে। প্রতিবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং রাজ্য সরকারের অধীনে সীমান্ত পরিচালনাকারী বিভাগ দ্বারা চূড়ান্ত করা প্রতিবেদনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। ২০১৮ সালে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত হতে পারে এমন এলাকাগুলোকে সুপারিশ করেন।
সরকার গত নভেম্বর মাসেই সড়কটিকে জাতীয় সড়ক হিসেবে ঘোষণা করেন। একটি রাস্তা এনএইচ হিসেবে ঘোষিত হলে তা নির্মাণের দায়িত্ব সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কাছে চলে যায়। অরুণাচল প্রদেশে সীমান্ত মহাসড়কের সাথে সংযোগকারী আন্তঃ করিডোরগুলো বিকাশের প্রস্তাবও রয়েছে।