spot_img
28 C
Dhaka

২৬শে মার্চ, ২০২৩ইং, ১২ই চৈত্র, ১৪২৯বাংলা

ব্রিটেনে ডেক্সামেথাসোন দিয়ে করোনার চিকিৎসা শুরু

- Advertisement -

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত কয়েকমাস ধরে সফল একটি পরীক্ষা বা ট্রায়ালের পর ব্রিটেনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জাতীয় স্বাস্থ্য বিভাগের (এনএইচএস) চিকিৎসকদের এখন থেকেই গুরুতর কোভিড রোগীদের এই ওষুধ দিতে বলেছেন।

ব্রিটেনের প্রধান মেডিকেল অফিসার বলেছেন, “অতি সত্বর এই ওষুধ দেওয়া শুরু করতে হবে।“ তিনি বলেন, এর সরবরাহ নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না।

ব্রিটেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক পার্লামেন্টে বলেছেন, দেশে এই মুহূর্তে ২৪০,০০০ ডেক্সামেথাসোন মজুদ রয়েছে।

তিনি বলেন, “এই ওষুধ দিলেই কোভিড রোগী সেরে উঠবে তা নয়, তবে এখন পর্যন্ত এর চেয়ে সুসংবাদ আমাদের কাছে নেই।“

সোমবার (১৫ই জুন) ব্রিটেনের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৮৫ জন কোভিড রোগী ভেন্টিলেটরে ছিলেন। সেইসাথে অক্সিজেন প্রয়োগে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন আরো কয়েকশো রোগী। এমন রোগীদের আজ থেকে হয়তো ডেক্সামেথাসোন দেওয়া শুরু হবে।

‘যুগান্তকারী আবিষ্কার‘

গবেষকরা বলছেন এরকম যেসব রোগী ভেন্টিলেটারে আছেন বা যারা অক্সিজেন চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের জীবন বাঁচাতে এই নতুন ওষুধ সাহায্য করবে

বিজ্ঞানীরা বলছেন ডেক্সামেথাসোন নামে সস্তা ও সহজলভ্য একটি ওষুধ করোনাভাইরাসে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের জীবন রক্ষা করতে সাহায্য করবে।

গুরুতর অসুস্থ কোভিড রোগীদের প্রয়োজন হয় অক্সিজেন চিকিৎসা। তাতে কাজ না হলে কৃত্রিমভাবে শ্বাস নেবার জন্য ভেন্টিলেটর লাগাতে হয়।

এই উচ্চ ঝুঁকির রোগীদের জন্যই ডেক্সামেথাসোন সাহায্য করতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালিত এই ট্রায়ালে বিভিন্ন হাসপাতালে দুই হাজার গুরুতর রোগীর ওপর এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছিল।

ট্রায়ালে দেখা গেছে, যেসব রোগী ভেন্টিলেটরে ছিলেন তাদের মধ্যে মৃত্যুর ঝুঁকি এই ওষুধ নেবার ফলে ৪০% থেকে কমে ২৮%এ দাঁড়ায়।আর অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ছিল এমন রোগীর বেরায় মৃত্যুর ঝুঁকি ২৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নামে।

অক্সফোর্ডের এই ওষুধের ট্রায়ালের প্রধান গবেষক অধ্যাপক মার্টিন ল্যানড্রে বলছেন এই পরীক্ষার ফলাফল থেকে দেখা যাচ্ছে যে, ভেন্টিলেটরে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে এমন প্রতি আট জন রোগীর মধ্যে একজনের প্রাণ এই ওষুধ দিয়ে বাঁচানো সম্ভব।আর যেসব রোগীকে অক্সিজেন দিয়ে চিকিৎসা করা হচ্ছে তাদের প্রতি ২০ থেকে ২৫ জনের মধ্যে একজনের জীবন এই ওষুধে বাঁচবে।

জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই স্বল্প মাত্রার স্টেরয়েড চিকিৎসা একটা যুগান্তকারী আবিষ্কার।

গবেষকরা বলছেন ব্রিটেনে যখন করোনা মহামারি শুরু হয়েছে তার প্রথম থেকেই যদি এই ওষুধ ব্যবহার করা সম্ভব হতো তাহলে পাঁচ হাজার পর্যন্ত জীবন বাঁচানো যেত। কারণ এই ওষুধ সস্তা।

তারা বলছেন বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোতে কোভিড ১৯ রোগীদের চিকিৎসায় এই ওষুধ কাজে লাগতে পারে। এবং যেসব দেশ রোগীদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে এটা তাদের জন্য বিরাট সুখবর।

কিছু সাবধান-বাণী

অধ্যাপক মার্টিন ল্যানড্রে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, কেউ যেন এই ওষুধ বাজার থেকে কিনে ঘরে মজুত করে না রাখেন।যাদের করোনাভাইরাসের হালকা উপসর্গ দেখা দেবে, অর্থাৎ যাদের শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে চিকিৎসকের সাহায্যের প্রয়োজন হবে না, তাদের ক্ষেত্রে ডেক্সামেথাসোন কাজ করবে না।

মার্চ মাস থেকে করোনাভাইরাসের চিকিৎসার জন্য ওষুধ নিয়ে ট্রায়াল চালানো হচ্ছিল। যেসব ওষুধ নিয়ে পরীক্ষা চালানো হচ্ছিল তার মধ্যে ছিল হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনও।এই ওষুধটির ওপর পরীক্ষা পরে বাতিল করে দেয়া হয়, কারণ এই ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় হার্টের সমস্যা এবং অন্য প্রাণনাশক প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়।

আরেকটি ওষুধ রেমডেসিভির, যেটি অ্যান্টি-ভাইরাল চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় সেটি সেরে ওঠার সময় কিছুটা তরান্বিত করতে পারে বলে দেখা যাবার পর করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় এই ওষুধের ব্যবহার ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে।

- Advertisement -

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফলো করুন

25,028FansLike
5,000FollowersFollow
12,132SubscribersSubscribe
- Advertisement -

সর্বশেষ