ধর্ম ও জীবন ডেস্ক, সুখবর ডটকম: আজ থেকে প্রায় শতবর্ষ আগে ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে মাওলানা ইলিয়াস (র:) ভারতের উত্তর প্রদেশের সাহরানপুর এলাকায় ইসলামী দাওয়াত তথা তাবলিগের প্রবর্তন করেন এবং একই সঙ্গে এলাকাভিত্তিক সম্মিলন বা ইজতেমারও আয়োজন করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় তা বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। দিন দিন বাড়তে থাকে তাবলিগের প্রচার-প্রসার ও ব্যাপকতা।
১৯৪৬ সালে প্রথমবারের মতো কাকরাইল মসজিদের ভেতরে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামের হাজি ক্যাম্পে এবং ১৯৫৮ সালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে তাবলিগ জামাতের ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। দিন দিন লোকসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ১৯৬৬ সালে টঙ্গীর পাগাড় গ্রামের কাছে বা টঙ্গীর মনসুর জুট মিলের নিকটে একটি মাঠে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই ইজতেমায় বিদেশি কয়েকটি জামাতও অংশ নেয়। এখান থেকেই এর নাম হয় বিশ্ব ইজতেমা।

১৯৬৭ সালে টঙ্গীর তুরাগ নদের পাড়ে প্রথমবারের মতো বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকার তুরাগ পাড়ের ১৬০ একর জমি তাবলিগ জামাতের জন্য বরাদ্দ দেয়। ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমা এক পর্বে অনুষ্ঠিত হতো। তবে লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ২০১৬ থেকে একাধিক পর্বে ইজতেমা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কথিত আছে, বাংলাদেশকে বিশ্ব ইজতেমার স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল লটারির মাধ্যমে। তবে তাবলিগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, বিষয়টি তাদের অজ্ঞাত। তাদের দাবি, দেশভাগের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশ, পশ্চিম পাকিস্তান এবং ভারতে পৃথক ইজতেমার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। তখন একই সঙ্গে তিন ভূখণ্ডে ইজতেমা শুরু হয়।
তবে অধিকসংখ্যক লোকের অংশগ্রহণ, স্বল্প ব্যয়ভার, ভিসাপ্রাপ্তির সহজতা, সাধারণ মুসলমানের আন্তরিকতা, অনুকূল পরিবেশ, সামাজিক ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশের ইজতেমা সারাবিশ্বের তাবলিগ জামাতের অনুসারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ক্রমেই বাংলাদেশের ইজতেমা বিশ্ব ইজতেমায় পরিণত হয়।
এমএইচডি/ আইকেজে /
আরও পড়ুন: