spot_img
28 C
Dhaka

২৬শে মার্চ, ২০২৩ইং, ১২ই চৈত্র, ১৪২৯বাংলা

প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়ে নৌকায় বসবাসের কষ্ট দূর হলো মিলন নেছার

- Advertisement -

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুখবর ডটকম: মুজিববর্ষে গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে দীর্ঘ ৩০ বছরের নৌকায় বসবাসের জীবনের অবসান ঘটতে যাচ্ছে শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলার ধীপুর গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা মিলন নেছার। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিলন নেছার খবর আসার পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মো: পারভেজ হাসানের সাথে যোগাযোগ করে তার খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে গত ১০ ফেব্রুয়ারি ‘মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর গৃহহীনদের ঘর উপহার’ প্রকল্পের আওতায় জেলায় কর্মরত বিবিএস প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের উদ্যোগে বাংলাদেশ এ্যাডমিনিষ্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশন শরীয়তপুরের পক্ষ থেকে একটি ঘর উপহার দেয়া হয়।
গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আলমগীর হোসেন বলেন, গণমাধ্যমে খবর আসার পরই জেলা প্রশাসক আমাকে বিস্তারিত খোঁজখবর নেয়ার দির্দেশ দেন। তথ্য যাচাই করে জেলা প্রশাসকের কাছে রিপোর্ট দেয়ার পর গত ১০ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী’র ‘মুজিববর্ষে গৃহহীনদের ঘর প্রদান’ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ এ্যাডমিনিষ্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশন শরীয়তপুর প্রধানমন্ত্রীর এ উদ্যোগে অংশ গ্রহণ করে। ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের একই নকশার একটি ঘর উত্তোলনের কাজ মিলন নেছার নিজ জায়গায় শুরু করা হয়েছে। আমরা আশা করছি আগামী এক মাসের মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে বসবাসের উপযোগী করে মিলন নেছার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা সম্ভব হবে।

শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলা সদরের ধীপুর গ্রামের মৃত কালু বেপারীর মেয়ে মিলন নেছা (৫২)। তার ২২ বছর বয়সে বাবার মৃত্যুর পর ছোট ভাই বোনদের দায়িত্ব নিয়ে ঋষিবাড়ি ঘাটে জয়ন্তী নদীতে বাবার নদী পারাপারের খেয়া নৌকার সাথে সাথে হাল ধরেন মা’সহ ছয় ভাই-বোনের সংসারের। তিন বছর পর বিয়ে হলেও দুই ছেলের জন্মের পর ৪ বছরের ব্যবধানে স্বামী তাদেরকে ছেড়ে নিরুদ্দেশ হয়। এর পর থেকে মিলন নেছার জীবন আরও কঠিন হয়ে পড়ে। খেয়া নৌকা চালিয়ে দুই ছেলেকে বড় করতে থাকেন কোন রকমে। বড় ছেলে বিয়ে করে মায়ের সঙ্গ ছেড়েছেন ৮ বছর আগে। ২২ বছর বয়সী ছোট ছেলে দিন মজুরের কাজ করলেও মিলন নেছাকে নির্ভর করতে হয় নিজের আয়ের উপর। এলাকার সবাই তাকে খালা বলে ডাকেন। দুই টাকা থেকে শুরু হয়ে এখন জনপ্রতি পারাপারের ভাড়া ৫ টাকা। এতে তার প্রতিদিন আয় হয় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। বাপ-দাদার কোনও জমিজমা না থাকায় ওই আয়ের উপর ভর করেই ছোট ছেলেকে নিয়ে কোন রকমে অন্য আরেকটি ছাউনি নৌকায় কাটছিল তার কষ্টের জীবন। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের মধ্যদিয়ে তার ৩০ বছরের নৌকায় বসবাসের কষ্ট ঘুচলো।

মিলন নেছা আবেগাপ্লুত কন্ঠে বলেন, দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর নৌকায় বসবাস করার পর বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র উপহারের ঘর পেয়ে আমি আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছি। গরমের দিনে কোন রকমে নৌকায় থাকা গেলেও প্রবল বর্ষা ও শীতে প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় বসবাস করতাম। কিন্তু এখন থেকে আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় থাকতে হবে না। বর্ষা-বাদল হোক আর শীত হোক নিশ্চিন্তে পরিবার নিয়ে রাত কাটাতে পারব। শেখ হাসিনা শুধু ঢাকায় বসে রাষ্ট্রই চালান না, আমার মতো পল্লীগ্রামের নৌকার মাঝিদেরও খোঁজ-খবর রাখেন এবং দুঃখ-দুর্দশা কমাতে কাজ করেন। আল্লাহ যেন আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে নেক হায়াত দান করেন এবং আমাদের মতো গরীব-দুঃখীর সেবা করার সুযোগ দেন- এ দোয়া’ই করি।

- Advertisement -

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফলো করুন

25,028FansLike
5,000FollowersFollow
12,132SubscribersSubscribe
- Advertisement -

সর্বশেষ