নিজস্ব প্রতিবেদক, সুখবর ডটকম: ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে মৌখিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে যারা পণ্যটির দাম বাড়িয়েছেন তাদের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন (বিসিসি)। তখন যারা নিজেদের মোকামে অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়িয়ে বাজারে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও ভাবছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এই অসৎ কুচক্রী ব্যবসায়ী মহল অতি মুনাফার লোভে সিন্ডিকেট করে পণ্যটির দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে দিয়েছেন। সুনির্দিষ্ট তথ্যের জন্য তাদের বিরুদ্ধে তদন্তও করবে বিসিসি। তদন্তে যারা দায়ী হবেন তাদের ব্যবসায়িক লাইসেন্স বাতিলের পক্ষে মত দিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান। একই সঙ্গে তাদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করা হবে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাজার মনিটরিং বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, গত বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বর পেঁয়াজের বাজারে কারসাজির জন্য যারা দায়ী ছিলেন তারাই আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। তখন তাদের চিহ্নিত করে সতর্ক করা হয়েছিল। কঠোর শান্তির মুখোমুখি হতে হয়নি বলে তারা সেটা আমলে নেননি। ফলে এবার তাদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এজন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা ঢাকাসহ সারা দেশের মনিটরিং টিমগুলোকে আবারও সক্রিয় করা হচ্ছে। অন্যদিকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমেও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। কারসাজিতে জড়িত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয়, পেঁয়াজ আমদানিকারকরা কী দামে আমদানি করেছেন আর কী দামে অভ্যন্তরীণ বাজারে বিক্রি করেছেন সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। আমদানিকারকরা পাইকারদের কাছ থেকে অস্বাভাবিক মূল্য আদায় করে থাকলে আমদানিকারকদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে বিসিসির চেয়ারম্যান মুফিজুল ইসলাম বলেন, খুচরা বিক্রেতারা দুই মাস আগের আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। কিন্তু রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘণ্টাখানেক পরই কেন দাম বাড়ানো হলো? এর পেছনে কারা দায়ী। আমরা ঠিক এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজছি। এতে যারা দোষী প্রমাণিত হবেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে তাদের ব্যবসায়িক লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হবে। যেন পরবর্তীতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে। আমরা তার একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই।
সূত্র জানায়, দাম বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে ইতিমধ্যে ব্যবসায়িক সংগঠন, কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে বৈঠকও করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও প্রতিযোগিতা কমিশন।