ডেস্ক রিপোর্ট: শান্তিচুক্তির ২৫ বছর পরেও পাহাড়কে অশান্ত করতে তৎপর একটি গোষ্ঠী। সেখানে বেড়েছে জঙ্গি তৎপরতা, দেয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ। তথাকথিত সুশীল সমাজ শান্তি চুক্তি নিয়ে গুজব এবং প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। বিদেশিদের কাছে সেই দেশবিরোধী অংশ বোঝানোর চেষ্টা করে যে শান্তি চুক্তি করে কোনো লাভ হয়নি। এসব অভিযোগ তুলে ’পাহাড়ে সম্প্রীতি’ শীর্ষক সম্প্রীতি বাংলাদেশের আয়োজনে এক অনুষ্ঠানে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে সরকার এবং সেনাবাহিনীর পাশাপাশি দেশপ্রেমিক সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়।
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) আয়োজিত অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহবায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়।
সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক সচিব ও সম্প্রীতি বাংলাদেশ এর যুগ্ম আহবায়ক নাসির উদ্দিন আহমেদ। বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নির্বাহী সদস্য শেখ এনায়েত হোসেন বাবলু, রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায়সহ অনেকে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, “পাহাড়ের শান্তি নষ্টের জন্য দায়ী সামরিক শাসকরাই। শান্তিচুক্তি হওয়ার পরেও সেখানের সম্প্রীতি নিয়ে আলোচনা কেন হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন বক্তাদের।”
তিনি বলেন, “পাহাড়ে পাহাড়ি-বাঙ্গালি সমস্যা আগের মতো নাই। স্থানীয় জাতিগোষ্ঠীর নিজেদের মাঝে এখন সমস্যা বেশি। অতীতে সব সামরিক সরকার উলফাসহ সীমান্তে সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দিয়েছে।”
কে এম খালিদ বলেন, “এখন দেশের ভেতরের কিছু জঙ্গি পাহাড়ে আস্থানা গাড়ছে। এর পেছনে কারা আছে তা জাতি বোঝে।” প্রসঙ্গত প্রতিমন্ত্রী বলেন, “যে খালেদা জিয়া গ্রেনেড মেরে শেখ হাসিনাকে মেরে ফেলতে চেয়েছেন, ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সেই খালেদা জিয়াকেই এখন শেখ হাসিনার অনুকম্পায় জেলের বাইরে বাসায় আরামে থাকতে হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “জিয়াউর রহমান সমস্ত খুনিদের একসাথে করে পাহাড়ে আশ্রয় দেওয়ায় এখনও পাহাড়ে অশান্তি দেখা যায়।”
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এবং শান্তিচুক্তি প্রক্রিয়ার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, পাহাড়ে জমি সংক্রান্ত সবচেয়ে বড় বিরোধ ছিল। তা অনেকটাই কেটে গেছে। পাহাড়বাসি মেনে নিয়েছেন। বরং বাঙ্গালিদের কিছু আপত্তি থাকলেও তা নিয়ে বাজে কোনো প্রতিক্রিয়া কেউ দেখাননি।
তিনি বলেন, আজ কেবল পাহাড়ে সম্প্রীতির কথা না বলে আমাদের সবার দেশের সম্প্রীতির কথা বলা উচিত।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহবায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পাহাড়ের শান্তি চুক্তির কেটে গেছে ২৫ বছর। চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে ৪৮টি আর ১৫টি আংশিক, ৮টি বাস্তবায়নের কাজ চলছে। হয়েছে রাস্তাসহ অবকাঠামো উন্নয়ন।
চুক্তির নানা দিক তুলে ধরে পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে শুধু সরকার কিংবা সেনাবাহিনীর ওপর নির্ভর থাকলে হবে না। সকলের একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।