ডেস্ক রিপোর্ট, সুখবর ডটকম: গত বছর কাবুল থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর প্রস্থানের পরপরই আফগান তালেবানদের প্রতি পাকিস্তানের সমর্থন সবচেয়ে বেশি স্পষ্ট ছিল। কিন্তু এক বছরের মাথায় পাকিস্তানের এ অবস্থানের পরিবর্তন ঘটেছে।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সাদিক মৌলিক মানবাধিকার, নারীর অধিকার ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধের বিষয়ে অগ্রগতির অভাব নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি মস্কোর বৈঠকে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এক্ষেত্রে বারবার সীমানা সংঘর্ষও পাকিস্তানের হতাশার জন্য কম দায়ী নয়।
পাকিস্তান আফগান তালেবান সরকারের সাথে সম্পৃক্ততার প্রবল সমর্থক। ইসলামাবাদ কাবুলে তালেবানদের আগমনকে বেশ আনন্দের সাথেই গ্রহণ করেছিল।
তবে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সাদিক বলছেন, বর্তমানে ইসলামাবাদ এবং রাওয়ালপিন্ডি উভয়েই তালেবানদের নিয়ে খুশি নয়।
পাকিস্তানের তালেবানদের প্রতি ক্ষোভের নিজস্ব কারণ থাকতে পারে। কিন্তু কাবুলের মানুষেরা বলছে এবারের তালেবানদের আগমন যেন সেই ১৯৯০ এর দশককেই আবার ফিরিয়ে এনেছে।
তালেবান প্রধান হিবাতুল্লাহ আহকুন্দজাদার ১৪ নভেম্বর, রক্তে ভেজা আফগানিস্তান জুড়ে শরীয়া আইন কঠোরভাবে প্রয়োগের নির্দেশ দেন। আইন মোতাবেক প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড, পাথর ছুঁড়ে মারা, বেত্রাঘাত ও অঙ্গচ্ছেদের মতো শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়, যার ফলে আফগানিস্তানের মতো দরিদ্র দেশে মানবাধিকারের ক্রমাগত অবনতি লক্ষ্য করা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আফগানিস্তানে জাতিসংঘের সহায়তা মিশন (ইউএনএএমএ) এ ব্যাপারে বলেছে, তালেবান শাসন মানবাধিকারের উপর হামলা চালাচ্ছে। কাবুলের দাশত-ই-বারচিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তালেবান বাহিনী নারী সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের গ্রেফতার করে।
তালেবানদের কারণে পাকিস্তানও বিপদে পড়তে পারে, এ ব্যাপার তারা এখন বুঝতে সক্ষম হয়েছে। তাছাড়া তালেবানরা আইএসআই দ্বারা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণেও সক্ষম নয়। সে কারণেই বিশেষ দূত সাদিক তালেবানদের প্রতি তার দেশের বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। তাছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপের পর পাকিস্তানের চিন্তাভাবনায় আংশিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
মোট কথা,পাকিস্তান-আফগানিস্তান সম্পর্ক শেষের দিকে। আফগানিস্তান মূলত পাকিস্তান-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করছে।