ডেস্ক রিপোর্ট, সুখবর ডটকম: পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি তার দেশকে উদীয়মান বাজার হিসেবে পুনরায় বিবেচনা করার জন্য আবেদন জানান ব্রিটেনের প্রতি। কিন্তু ব্রিটেন সরকার সরাসরি তার এই আর্জিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে অমুসলিমদের জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করার অপরাধে মুসলিম ধর্মগুরু মাওলানা আব্দুল হক ওরফে মিয়া মিঠুর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ব্রিটেন। সেই সময়েই বিলাওয়াল ব্রিটেনের কাছে এই আর্জি জানান।
উল্লেখ্য, ২০০৮ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে, পাকিস্তান পিপলস পার্টির অন্যতম আইন প্রণেতা মিঠু সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মেয়ে রিঙ্কেল কুমারীকে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করার ফলে ব্যাপক সমালোচিত হন। তাকে দল থেকেও বহিষ্কার করা হয়৷
বিলাওয়াল তার দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সিঙ্গাপুরের সাথে সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা করেন। গত ৯ ডিসেম্বর তিনি সিঙ্গাপুর সফরে যান। গত শনিবার সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রপতি হালিমা ইয়াকুবের সাথে সাক্ষাৎ করে পাকিস্তানের সাথে সিঙ্গাপুরের সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা করেন।
গত শুক্রবার, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস এবং মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে সিন্ধুর ঘোটকিতে ভরচুন্ডি শরীফ মাজার মিয়া আব্দুল হকসহ নিষেধাজ্ঞার একটি নতুন তালিকা ঘোষণা করেন।
এই তালিকায় বন্দিদের নির্যাতন, বেসামরিক নাগরিকদের ধর্ষণ, সন্ত্রাসীদের একত্রীকরণ ও নৃশংসতার দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা রয়েছেন।
এ ব্যাপারে জেমস বলেন, “বিশ্বব্যাপী এক মুক্ত সমাজের প্রচার করাই আমাদের কর্তব্য।”
তিনি আরো বলেন, মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনকারী জঘন্য ব্যক্তিরাই এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। এর ফলে মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনকারী এসব ব্যক্তিদের মুখোশ সারা বিশ্বের সামনে উন্মোচিত হল। তাছাড়া এসব ব্যক্তিদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির মাধ্যমে স্বাধীনতার ভবিষ্যৎও সুরক্ষিত হল।
হক, পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে বসবাসকারী একজন ধর্মগুরু এবং রাজনীতিবিদ। তিনি সিন্ধু অঞ্চলের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে একজন। তবে সংখ্যালঘুদের, বিশেষ করে হিন্দুদেরকে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করার জন্য তিনি ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন। তার নামও যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে।
এ নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিদের সম্পদ জব্দ করার অধিকার যুক্তরাজ্য রাখে। তাছাড়া তাদের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়। সেইসাথে যুক্তরাজ্যের যে কোনো নাগরিক, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, নির্ধারিত ব্যক্তির মালিকানাধীন, অধিষ্ঠিত বা নিয়ন্ত্রিত কোনও তহবিলের সাথে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়। নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে রাশিয়া, উগান্ডা, মিয়ানমার এবং ইরান।
এই নিষেধাজ্ঞার কার্যকরী অর্থ হলো, নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিরা যুক্তরাজ্যের কোনও নাগরিক বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সাথে কোনও ধরনের ব্যবসা বা অর্থনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত হতে পারবে না। তাছাড়া তাদের যুক্তরাজ্যে প্রবেশাধিকারও নিষিদ্ধ।
এদিকে, পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের হিন্দু সম্প্রদায় এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো প্রায়শই মিঠুর বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে শিশুদের অপহরণ এবং জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ করে আসছে। তারা অভিযোগ জানায় যে মিঠুর কার্যকলাপের সাথে সবাই পরিচিত এবং পাকিস্তানি রাষ্ট্রও তার অপরাধের সাথে যুক্ত।