ডেস্ক রিপোর্ট, সুখবর ডটকম: ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি এবং এই যুদ্ধবিরতিটি যথাযথভাবে পালিত হওয়ায় চলতি বছরটি সীমান্তবর্তী মানুষদের জন্য ফলপ্রসূ এবং শান্তিপূর্ণ ছিল। এর ফলে কাশ্মিরে বেড়েছে পর্যটকের সমাগম।
যদিও সীমান্তের শান্তিময় পরিবেশের দরুণ এখানে পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে পাকিস্তানের মদদপুষ্ট জঙ্গীরাও ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালিয়েছে বহুবার। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতে, চলতি বছরে পাকিস্তানের সন্ত্রাসীরা নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর প্রায় ১২বার অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছে। কিন্তু ভারতীয় সেনাদের প্রচেষ্টায় বারবারই তারা ব্যর্থ হয়ে ফিরে গিয়েছে।
এ প্রচেষ্টায় ১৮ জন পাকিস্তানি সন্ত্রাসীকে নির্মূল করা হয়েছে এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।
২০২০ সালে, পাকিস্তান প্রায় ৪,৬৪৫ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের চেষ্টা চালায়। সে তুলনায় এ বছরের প্রচেষ্টা তেমন কিছুই নয়। তবে নিরাপত্তা বাহিনির জন্য প্রধান উদ্বেগের বিষয় হলো ভারতীয় ভূখণ্ডে ড্রোনের অনুপ্রবেশ। বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) এর মতে, চলতি বছরে জম্মু অঞ্চলে পাকিস্তানিরা ২২ বার ড্রোন প্রবেশের চেষ্টা চালায়।
এসব কিছু ছাড়া, এ বছর সীমান্ত অঞ্চলগুলো পর্যটক দ্বারা পরিপূর্ণ ছিল। গুরেজ এবং বুঙ্গুস উভয়েই শীর্ষস্থানীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, যেখানে প্রচুর পর্যটকদের আগমনের ঘটনা ঘটেছে।
গুরেজ উপত্যকা, যা মর্টার শেল এবং গুলি চালানোর জন্য বিখ্যাত, এ বছর ভারতের সেরা পর্যটন কেন্দ্রের পুরস্কার পেয়েছে।
প্রায় ছয় দশক পর এখানে ঘোড়ার পোলো খেলা হলো। তাছাড়া ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো, সিনেমা “চাহিয়ে থোরা প্যায়ার” এর শুটিংয়ের জন্য বলিউড এই জায়গায় পা রাখল।
স্থানীয়রা জানান, এমন শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ থাকলে তারাও নিরাপদ জীবন কাটাতে পারেন। কৃষকরা জানান, এলওসি বরাবর কাঁটাতারের ওপারে তাদের জমিতে যেতেও তারা সক্ষম হয়েছেন।
কুপওয়ারার কর্নাহ জেলার সীমান্তবর্তী বাসিন্দা মহম্মদ আশরাফ বলেন, এই বছরের শুরুর থেকেই সীমান্তবর্তী এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং শান্তিপূর্ণ থাকায়, এখানে উন্নয়নের জোয়ার বয়েছে। একইভাবে কর্নাহ, গুরেজ, উরি এবং অন্যান্য অঞ্চলের বাসিন্দারাও জানিয়েছেন, এই শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতির জন্যেই পর্যটকদের জন্য তাদের এলাকাগুলো উন্মুক্ত করা সহজ হয়েছে।
রাজৌরির এক সীমান্ত বাসিন্দা মহম্মদ বানি জানান, এ বছর বিরাজমান শান্ত পরিবেশের কারণেই পর্যটকেরা তার এলাকায় আসতে পেরেছে এবং এই শান্তি বজায় থাকা উচিত।
তিনি আরো জানান যে, চলতি বছরেই ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল এবং অবকাঠামোর মেরামত শুরু হতে পারে।
এরই মধ্যে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কাশ্মিরে আবার বিয়ের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। শুধু কাশ্মিরেই চলতি বছরে ২৭০টি বিয়ে হয়েছে।
আই. কে. জে/