spot_img
28 C
Dhaka

২৬শে মার্চ, ২০২৩ইং, ১২ই চৈত্র, ১৪২৯বাংলা

নগদ সহায়তা পাচ্ছেন ৭ লাখ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খামারি

- Advertisement -

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুখবর ডটকম: করোনা মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় সাত লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি ডেইরি, পোল্ট্রি ও সামুদ্রিক মৎসচাষী ও খামারিদের অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রকল্পটির আওতায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও মৎস্য অধিদপ্তর থেকে প্রত্যেক খামারি ৩,৫০০ টাকা থেকে ২২,০০০ টাকা অনুদান পাবে। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে দু’টি প্রকল্পে বরাদ্দকৃত ৮৪৬ কোটি টাকা থেকে এই অনুদানের জন্য তহবিল গঠন করেছে প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য অধিদপ্তর।

রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য এক আয়োজনে খামারিদের মধ্যে এই অর্থ বিতরণ করা হবে। মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী এস এম রেজাউল করিম, পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এবং কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক সেখানে উপস্থিত থাকবেন। মোট অর্থায়ন থেকে ডেইরি, পোল্ট্রি এবং মৎসখাতের যথাক্রমে ৪ লাখ ২০ হাজার, ২ লাখ এবং ৭৬ হাজার খামারি অনুদান পাচ্ছে।

পশুসম্পদ ও মৎস্য খাতের উদ্যোক্তারা প্রথমবারের মতো প্রান্তিক চাষীদের জন্য প্রণোদনার ঘোষণায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে। তবে, এতো স্বল্প অনুদানের জন্য তারা হতাশাও প্রকাশ করেন।

এদিকে খামারিদের সংগঠনের নেতারা জানান, দুধ, ডিম এবং মাংসের মূল্য কমানোর জন্য ডেইরি ও পোলট্রি খাতে ২০ হাজার কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। বাংলাদেশ টেকসই উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মৎস্য প্রকল্পের পরিচালক কে এম মাহবুবুল হক জানান, “বিশ্ব ব্যাংকের দুটি প্রকল্পের নিয়মিত কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায়, কর্তৃপক্ষ বর্তমান অর্থবছরের জন্য বরাদ্দকৃত ১২.২ মিলিয়ন ডলার বিকল্প ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

কর্মকর্তাদের তথ্যানুসারে, অধিকাংশ অনুদানই মোবাইল আর্থিক সেবার মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। এলডিডিপি পরিচালক বলেন, “অনুদানের বেশির ভাগই নগদ এবং বিকাশের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। বাকি অংশ গ্রাহকদের পছন্দ অনুসারে বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে স্থানান্তরিত হবে।”

তিনি আরও জানান, অনুদানপ্রাপ্ত খামারিদের চিহ্নিত করতে বিভিন্ন সংগঠনের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। এসব সংগঠনের মধ্যে আছে বাংলাদেশ পোলট্রি  ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল, বাংলাদেশ ডেইরি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ভিত্তিক ওয়ার্ল্ডস পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন এবং অ্যানিমেল হেলথ কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন।

মোট অর্থায়নের ৭৪৬ কোটি টাকা ডেইরি ও পোলট্রি খাতে যাবে। অন্তত দুটি গরু সহ ক্ষুদ্র খামারগুলো পাবে দশ হাজার টাকা। অন্যদিকে, ১০ টি গরুর বেশি থাকলে খামারিরা ২০ হাজার করে টাকা পাবেন। ৬১ টি জেলার ৪৬৬ উপজেলায় অর্থ চালান যাবে।

পাখির সংখ্যার উপর ভিত্তি করে কর্তৃপক্ষ পোলট্রি ফার্মগুলোকে চারভাগে ভাগ করেছেন। বড় খামারগুলো প্রতিটি সর্বোচ্চ ২২ হাজার টাকা পাবে। দুই লাখ পোলট্রি খামারিকে সাহায্যের আওতায় আনা হবে। ন্যূনতম ১০০টি সোনালি, ব্রয়লার বা লেয়ার মুরগি ও হাঁস থাকলে খামারিরা সাড়ে তিন হাজার টাকা পাবেন।

অন্যদিকে, উপকূলীয় অঞ্চলের আট জেলার ৭৫ উপজেলার ৭৬ হাজার ৭৪ জন এক হাজার থেকে আট হাজার পর্যন্ত টাকা পাবেন।

মাহবুবুল বলনে, ক্ষুদ্র চিংড়ি ঘেরের প্রত্যেকে ১৬ হাজার করে টাকা পাবেন, অন্যদিকে মাঝারি ঘেরগুলো পাবে ১৮ হাজার টাকা। মাঝারি আকারের পুকুর ভিত্তিক মাছচাষীরা ১৬ হাজার এবং ক্ষুদ্র পুকুরের ক্ষেত্রে প্রত্যেকে ১০ হাজার করে টাকা পাবেন। “খোলা জলাভূমিতে কাঁকড়া, কুচিয়া চাষীরাও মহামারিতে আক্রান্ত হয়েছেন। এই খাতেরও কিছু খামারি ১০ হাজার করে টাকা পাবেন। মৎস্য খাতে ১০০ কোটি টাকার নগদ অর্থায়ন দেওয়া হবে,” বলেন তিনি।

মহামারির সময় লকডাউন ঘোষণার ফলে ডিম, মাংস ও দুধের চাহিদা কমে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় পোলট্রি ও ডেইরি খাত। মৎস্য খাতেরও একই অবস্থা ছিল। খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের সাধারণ সচিব খন্দকার মোহাম্মদ মোহসিন বলেন, খামারিরা মহামারির প্রথম আঘাতে বেচাকেনা কমায় ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হন।

তিনি আরও বলেন, অনেক খামারিই তাদের সর্বস্ব হারিয়েছে। চার থেকে পাঁচ হাজার টাকায় তাদের কিছুই হবে না।

বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ খলিলুল্লাহ জানান, উপকূলীয় অঞ্চলের প্রান্তিক খামারিরা প্রদানকৃত অর্থে সামান্য উপকৃত হবে। তবে তিনি এই খাতের ব্যবসায়ীদের আর্থিক অনুদান না দিলেও প্রণোদনা প্রকল্পের আওতায় আনার কথা বলেছেন। অন্যদিকে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে উন্নীত করতে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা বলেছেন।

- Advertisement -

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফলো করুন

25,028FansLike
5,000FollowersFollow
12,132SubscribersSubscribe
- Advertisement -

সর্বশেষ