ডেস্ক রিপোর্ট, সুখবর ডটকম: তিব্বতের জনগণের উপর চীন কমিউনিস্ট পার্টির অত্যাচার ক্রমশ বেড়েই চলেছে। চীন মানবাধিকার লঙ্ঘনের খেলায় এমনভাবে মেতেছে যে তাদের বিরুদ্ধে যারাই প্রতিবাদের আঙ্গুল তুলছে তাদেরকেই শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে।
তিব্বতে তিব্বতি সংস্কৃতি অনুশীলন, তিব্বতি ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে চীন। এমনকি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে দালাইলামার নামের ব্যবহারের উপরেও। গত ৩০ বছরে, চীনের বৈষম্যের প্রতি সারাবিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য অনেক তিব্বতিরা নিজেদের প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছেন এবং আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
গত ১০ ডিসেম্বর, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে, বিশ্বজুড়ে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের বাইরে তিব্বতিরা বিক্ষোভ করেছে। এর থেকে আশা করা যায় যে তারা আবার হয়তো একত্রিত হবে তাদের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে।
চীন এখন এই অঞ্চলের জাতিগত ও সাংস্কৃতিক ভারসাম্য এবং দেশের ইতিহাসের স্বতন্ত্র পরিচয়কে বিঘ্নিত করে জনসংখ্যার পরিবর্তন করতেও প্রস্তুত। চলতি বছরের জানুয়ারিতে, তিব্বতের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ড্রেগোতে ধর্মীয় তাৎপর্যপূর্ণ ৯৯ ফুট লম্বা একটি মূর্তি এবং ৪৫ টি ঐতিহ্যবাহী প্রার্থনার চাকাকে ধ্বংস করে চীন। এর মাধ্যমে তিব্বতের সংস্কৃতির উপর সরাসরি আঘাত হানে চীন। তবে এ খবর যেন বাইরে না যায় তার সর্বোচ্চ চেষ্টাও করেছিল চীনা সরকার। সেজন্যেই অনেক স্থানীয়দেরকে গ্রেফতার করে শ্রম শিবিরেও পাঠানো হয়।
চীনা নেতা শি জিনপিং তিব্বতে বিক্ষোভকারীদের মোকাবেলা করতে দুর্ভেদ্য দুর্গ গড়ে তুলার ঘোষণা দেন। এ ঘোষণার অর্থ এটাই দাঁড়ায় যে চীন তিব্বতের মানুষদের উপর নিজেদের প্রভাব খাটানো থেকে সরতে চাইছে না বরং তিব্বতিদেরকে হয়তো আরো অত্যাচার-অনাচারের সম্মুখীন হতে হবে। এ অত্যাচারের প্রতিবাদে যারাই এগিয়ে আসবে তাদেরকেই নিশ্চিহ্ন করে দিবে চীন।
২০০৮ সালে চীনাদের অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে গিয়ে তিব্বতিদের উপর নেমে আসে চীনা অত্যাচারের কালো মেঘ। ঐ ঘটনা এখনো তাদের তাড়া করে বেড়ায়। তিব্বতিদের সম্পূর্ণভাবে দমনের জন্য নেপালের সাথেও প্রত্যর্পণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে চীন। জানতে পারা যায়, শি জিনপিং তার নেপাল ভ্রমণের সময় সেখানে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। কারণ নেপালে অনেক তিব্বতিরা নির্বাসনে বাস করছে। চুক্তি অনুযায়ী, তিব্বতি শরণার্থীদেরকে হস্তান্তর করবে নেপাল।
নেপাল যখন শি জিনপিংয়ের প্রকৃত উদ্দেশ্য বুঝতে পারে তখন দেশটি চুক্তি স্থগিতের চেষ্টা করে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নেপালের এ চেষ্টা ব্যর্থ করে দেন। তিব্বতের জনগণদের প্রত্যর্পণের বিনিময়ে চীনের পক্ষ থেকে নেপালে পরিকাঠামোগত বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি করা হয়েছে।
তিব্বতিদের নিজেদেরকে চীনের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষা করতে হলে যে কোনো মূল্যেই আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে। এছাড়া তাদের আর দ্বিতীয় কোনও উপায় নেই।