ডেস্ক রিপোর্ট, সুখবর ডটকম: তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) এর শান্তিচুক্তি প্রত্যাহার এবং তালেবানদের আফগানিস্তানের উপর কর্তৃত্ব সৃষ্টির ফলে অস্থির আফগানিস্তান-পাকিস্তান অঞ্চলটি আবার সন্ত্রাসবাদের বৈশ্বিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
পাকিস্তানের জন্য দ্বৈত ধাক্কা নিয়ে এসেছে এ ঘটনা। ২০২২ সালে পাকিস্তানে ১৫টিরও বেশি আন্তঃসীমা হামলার ঘটনা ঘটেছে।
টিটিপি এবং আফগান-পাক সীমান্তে সক্রিয় অন্যান্য ইসলামপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির দ্বারা গত বছরে ২৬২টি সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে৷ এতে ৪১৯ জন পাকিস্তানি নিহত এবং ৭৩৪ জন আহত হয়।
তালেবানেরা আল-কায়েদা, ইসলামিক স্টেট মুভমেন্ট অফ উজবেকিস্তান, ইটিআইএম (ইস্ট তুর্কেস্তান ইসলামিক মুভমেন্ট) বা টিআইপি (তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টি) এবং টিটিপির মতো বিদেশী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে কিনা তা অনিশ্চিত বলে মনে হচ্ছে। কাবুল শুধুমাত্র আইএসকেপির বিরুদ্ধে কাজ করছে, টিটিপি এবং হাফিজ গুল বাহাদুর গোষ্ঠীর মতো সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে নয়।
পাকিস্তানই একমাত্র রাষ্ট্র যারা আফগানিস্তানে তালেবান শাসন নিয়ে আনন্দিত ছিল। কিন্তু এবার তাদের সমস্ত ভুল ধারণা ভেঙ্গেছে এবং তারা বুঝতে পারছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেন তালেবানদের বিরোধিতা করছিল।
সেই সাথে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিশেষ উপদেষ্টা রওফ হাসানের কথাও উঠে আসে৷ টিটিপিকে দমন করার তার কৌশলগুলোকে আংশিক সফল হয়েছে। কারণ টিটিপির অধিকাংশ কর্মকর্তারাই সীমানা পেরিয়ে আফগানিস্তানে পৌঁছে সেখানকার তালেবানদের সাথে মিলে একত্রে কাজ করছে।
আফগানিস্তানে তালেবানদের ক্ষমতাকে স্বীকৃতি প্রদান এবং টিটিপিকে দমন করতে ব্যর্থতার দরুণ পাকিস্তান রাষ্ট্র নিজের কবর নিজেই নির্মাণ করেছে।
যদি পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তানে অবস্থিত টিটিপি সদস্য এবং তাদের সমর্থকদের পরাজিত করতে চায়, তবে তাদেরকে অবশ্যই জানতে হবে তাদের লক্ষ্য কী। লক্ষ্যহীন যুদ্ধ কখনোই তাদের জন্য বিজয় বয়ে আনবে না।
উল্লেখ্য, ২০০২-২০১৪ সাল পর্যন্ত সন্ত্রাসবাদের কারণে প্রায় ৭০ হাজার পাকিস্তানি মারা গিয়েছে।
এছাড়াও আফগানিস্তানে তালেবান শাসকগোষ্ঠী আসার পর তারা ডুরান্ড সীমানাকে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। যার ফলে দুই দেশের সীমান্তে উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।