নিজস্ব প্রতিবেদক, সুখবর ডটকম: ‘প্রকৃতির পানি পরিশোধন যন্ত্র’ হিসেবে পরিচিত ঝিনুক নিধনে মেতে উঠেছেন খুলনার কয়রা উপজেলার মানুষ। ২০০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এক মণ ঝিনুক। প্রতিদিন খাল ও নদী থেকে মণকে মণ ঝিনুক উত্তোলন করছেন কয়রার বাসিন্দারা। এসব ঝিনুক বিক্রি হচ্ছে পাইকগাছা উপজেলায়।
কয়রা উপজেলার শাকবাড়িয়া গাঙ এলাকায় শিশু-কিশোর থেকে নারী-পুরুষ সবাই পানিতে ডুব দিয়ে ঝিনুক তুলে আনছেন। গাঙের প্রায় দুই কিলোমিটারজুড়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়। গাঙে মিলছে প্রচুর ঝিনুক। দুই হাত ভরে তুলে এনে তা ভালো করে ধুয়ে বস্তাবন্দি করা হচ্ছে।
উপজেলা মৎস্য দপ্তর সূত্রে জানা যায়, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় শামুক-ঝিনুক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এরা যেসব জলাশয়ে থাকে সেখান থেকে ময়লা-আবর্জনা খেয়ে পানি দুষণমুক্ত রাখতে সহায়তা করে। এজন্য এদেরকে ‘প্রকৃতির ফিল্টার’ বলা হয়। কিন্তু যারা ঝিনুকের ব্যবসা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না সরকারি এই দপ্তরটি।
কয়রা উপজেলার শিমলারআইট গ্রামের হোসেন গাজী নামের এক বৃদ্ধ বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে গাঙে ঝিনুক কুড়িয়ে বেশ আয় হচ্ছে। প্রতিদিন ৭০-৮০ কেজি ঝিনুক পাচ্ছি। প্রতি কেজি ৩-৪ টাকায় বিক্রি করে দিনে ৩০০-৩৫০ টাকা আয় হচ্ছে।’
ওই গ্রামের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভাটায় খালে পানি কমে যায়। তখন ঝিনুক তুলতে সুবিধা হয়। প্রতিদিন ৩-৪ ঘণ্টা পরিশ্রম করে অনেকে ৬০০-৭০০ টাকাও আয় করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাইকগাছা উপজেলার চাঁদখালী বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে শামুক ও ঝিনুক ক্রয় করেন। মূলত বর্ষার মৌসুমে এগুলো বেশি পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাঁদখালী বাজারের একজন ব্যবসায়ী জানান, তারা এসব ঝিনুক ৩৫০ টাকা মণ কিনছেন। এটা দিয়ে চুন তৈরি করে বিক্রি করছেন। তবে বিস্তারিত কোনো তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
কয়রা সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল হক বলেন, শামুক-ঝিনুক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এগুলোকে ‘প্রকৃতির ফিল্টার’ বলা হয়। বন্যপ্রাণী নিধন আইনে প্রাকৃতিক উৎস থেকে শামুক-ঝিনুক আহরণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অবৈধভাবে এ ব্যবসা করলে কিংবা প্রাকৃতিক উৎস থেকে আহরণ করলে আইন অনুযায়ী শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এম এইচ/আইকেজে
আরও পড়ুন:
উখিয়ার লাল কাঁকড়ার সৈকতে আমন্ত্রণ জানানো হবে প্রধানমন্ত্রীকে