নিজস্ব প্রতিবেদক, সুখবর ডটকম: কারাগারে পাঠানোর সাড়ে তিন ঘণ্টা পর চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে জামিন দিয়েছেন আদালত। শনিবার (১৮ মার্চ) বিকেলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেন মাহির জামিন মঞ্জুর করেন।
প্রেগনেন্সি ও সেলিব্রেটি বিবেচনায় আদালত এ আদেশ দিয়েছেন বলে জানান মাহির আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনোয়ার শাহাদাত সরকার। তিনি বলেন, তার মক্কেল আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলেই মামলা হওয়ার পরও দেশে চলে এসেছেন।
এর আগে দুপুরে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসেন তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে মাহিকে গাজীপুর জেলা কারাগারে নেওয়া হয়।
এদিন দুপুর ১২টার দিকে জিএমপির সদস্যরা হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে মাহিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এর আগে স্বামীর সঙ্গে ওমরাহ পালন করতে যাওয়া মাহি সৌদি আরবের মক্কা শহর থেকে শুক্রবার (১৭ মার্চ) ভোরে ফেসবুক লাইভে আসেন। লাইভে মাহিয়া মাহি অভিযোগ করে বলেন, তার স্বামী ব্যবসায়ী-আওয়ামী লীগ নেতা রকিব সরকারের গাড়ির শোরুমে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ওই ফেসবুক লাইভে পুলিশের বিরুদ্ধে ‘ঘুষ নিয়ে প্রতিপক্ষকে জমি দখল দেওয়ার চেষ্টা’রও অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে ফেসবুক লাইভে মানহানিকর তথ্য প্রচারের অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মাহি ও তার স্বামী রকিব সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ।
শুক্রবার (১৭ মার্চ) রাতে গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) বাসন থানায় মামলাটি করা হয়। মামলায় প্রধান আসামি রকিব সরকার এবং দ্বিতীয় আসামি মাহিয়া মাহি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে মানহানিকর তথ্য প্রচারের অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া মামলায় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে গ্রেপ্তার করা হলেও তার স্বামী রকিব সরকার এখনও দেশে ফেরেননি। ধারণা করা হচ্ছে গ্রেপ্তার এড়াতে মাহির স্বামী দেশে আসেননি। তবে তিনি কোথায় আছেন তা এখনও নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।
এর আগে ফেসবুক লাইভে মাহিকে নিয়ে রকিব সরকার বলেন, গাজীপুর মহানগরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের পূর্ব পাশে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে ‘সনিরাজ কার প্যালেস’ নামে তার গাড়ির একটি শোরুম রয়েছে। স্থানীয় ইসমাইল হোসেন ও মামুন সরকার লোকজন নিয়ে শুক্রবার ভোর পাঁচটার দিকে হামলা চালিয়ে ওই শোরুমে ব্যাপক ভাঙচুর করেন। হামলাকারীরা শোরুমের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন আসবাব, দরজা–জানালার কাচ, টেবিল–চেয়ার ভাঙচুর এবং শোরুমের সাইনবোর্ড খুলে নেয়। অফিস কক্ষ তছনছ করে এবং টাকাপয়সা লুট করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে রকিব সরকারের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
লাইভে রকিব সরকার অভিযোগ করেন, জিএমপি পুলিশ দেড় কোটি টাকা ঘুষ নিয়ে ইসমাইলের পক্ষে জমি দখল করে দিতে চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘জমি ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে রকিব সরকার আমার কাছে এক কোটি টাকা দাবি করেছিলেন। যেখানে এক কোটি টাকা দিলে সমস্যা সমাধান হয়, সেখানে কেন আমি পুলিশকে দেড় কোটি টাকা দেবো? পুলিশ আমার পক্ষে থাকলে আজ আমি কেন মার খেলাম, কেন আমি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে গিয়ে অভিযোগ দিলাম।’
ওআ/ আই. কে. জে /