নিজস্ব প্রতিবেদক, সুখবর ডটকম: পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিন’স এর ছেঁড়াদ্বীপে পর্যটকদের যাওয়া বারণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দ্বীপের সৈকতে মোটরসাইকেল চলাচলসহ দূষণ রোধে ব্যবস্থা নিতে পরিবেশ আইনের আওতায় কোস্টগার্ডকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
পর্যটন মৌসুমকে সামনে রেখে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এ সংক্রান্ত পরিপত্র দিয়েছে বলে জানান পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ড. ফাহমিদা খানম।
শনিবার তিনি বলেন, “মন্ত্রণালয় থেকে এ ধরনের একটা পরিপত্র দেওয়া হয়েছে। একমাত্র জীবিত কোরাল রয়েছে ছেঁড়াদ্বীপে এখন। দূষণ আর পর্যটনের চাপে অন্য জায়গায় সব নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা যদি এখন এটাকে বাঁচাতে পারি, পর্যটকের সংখ্যা কমিয়ে আনতে পারি, তাহলে বাঁচবে কোরাল।
“ছেঁড়াদ্বীপে যাওয়া একদম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ছেঁড়াদ্বীপে যেন কোনোভাবেই পযর্টক না যায়- এজন্য কোস্টগার্ডের সহায়তা চেয়েছি আমরা, যাতে ছেঁড়াদ্বীপকে রক্ষা করতে পারি। তিন চার-বছরের মধ্যে চারদিকে তা (কোরাল) বাড়বে। দূষণ বন্ধ করতে পারলে কোরাল স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাড়বে।”
অধিদপ্তরের পরিচালক (প্লানিং) মো. সোলায়মান হায়দার বলেন, “সেন্ট মার্টিন’স এর পরিবেশ রক্ষায় সরকার বেশ কিছু সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে নিয়েছে। এখন ধাপে ধাপে কিছু বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য কোস্টগার্ডকে বলা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “ছেঁড়া দ্বীপে না যেতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে সেন্ট মার্টিন’স এর সৈকতে মোটরযান চলাচল বন্ধ রাখা, রাতে উচ্চস্বরে দূষণ-আগুন জ্বালানো বন্ধ রাখা এবং প্লাস্টিক ব্যবহারসহ পরিবেশ দূষণ করে এমন অবৈধ কার্যক্রম রোধে কোস্টগার্ড ব্যবস্থা নেবে।
“কোস্টগার্ড এ দ্বীপে স্থায়ীভাবে রয়েছে, আইনশৃঙ্খলারক্ষায় কাজ করছে। সেন্ট মার্টিন’স এর জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পরিবেশ আইনের আওতায় কোস্টগার্ডকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে মন্ত্রণালয়ের এ পরিপত্র দেওয়া হয়।”
সাগরজলে ভেসেওঠা বাংলাদেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিন’স। বৈচিত্র্যে ঠাসা চিরসবুজ এ দ্বীপের স্থানীয় নাম নারিকেল জিঞ্জিরা। টেকনাফ থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রগর্ভে এই দ্বীপের অবস্থান। প্রায় ১৬ বর্গকিলোমিটার দীর্ঘ এ দ্বীপের আকর্ষণ সৈকত জুড়ে প্রবাল পাথরের মেলা, সারিসারি নারিকেল গাছ, সমুদ্রের নীল জলরাশি আর এখানকার অধিবাসীদের বিচিত্র জীবনযাপন। প্রায় ১০ হাজার লোকের বসবাস এই দ্বীপে। এই দ্বীপের একেবারে শেষ প্রান্তে ছেঁড়াদ্বীপ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ফাহমিদা খানম বলেন, “সেন্ট মার্টিন’স এখন আইসিইউর রোগী, এমন রোগীকে বাঁচাতে হলে বিশেষ উদ্যোগ থাকতে হবে। সবার সহযোগিতায় ছেঁড়াদ্বীপসহ সব জীববৈচিত্র্য বাঁচানো সম্ভব।
“লোকজন যেন ছেঁড়াদ্বীপে যাওয়ার চিন্তা বাদ দিয়ে ট্রাভেলে যায়। সামনে আমরা চেষ্টা করব সেন্টমার্টিন’সকে পুরোপুরি যদি ক্লোজ করে দেয়া যায় তিন থেকে পাঁচ বছরের জন্য। সেন্ট মার্টিন’স সুরক্ষায় একটা প্রকল্প চলমান রয়েছে।”