ডেস্ক রিপোর্ট, সুখবর ডটকম: দুইটি এন্টিভাইরাল ওষুধের সংমিশ্রণে তৈরি প্যাক্সলোভিড। চীন যে গুটিকয়েক বিদেশি ওষুধকে অনুমোদন দিয়েছে তার মধ্যে একটি এটি। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গেছে, এ ওষুধ ৯০% মানুষকে করোনা থেকে সুস্থ রাখতে সহায়ক।
তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এ ওষুধ চীনে অনুমোদিত হওয়ার পরেও ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে এ ওষুধের ব্যবহার খুব কমই দেখা গিয়েছে। মূলত শূন্য কোভিড নীতি তুলে নেওয়ার পর ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণের ফলে এ ওষুধের চাহিদা বাড়তে থাকে।
চীনা কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে যে, দেশটিতে প্যাক্সলোভিডের সরবরাহ চাহিদার তুলনায় অনেক কম। ফাইজারের প্রধান নির্বাহী আলবার্ট বোরলা গত সপ্তাহে জানান, ২০২২ সালে হাজার হাজার প্যাক্সলোভিড চীনে পাঠানো হয় এবং গত কয়েক সপ্তাহে আরো লক্ষ লক্ষ পাঠানো হয়েছে।
ফাইজার কোম্পানিটি চীনে প্যাক্সলোভিডের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে চীনা কর্তৃপক্ষকে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করছে।
ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণের রুখতে চীন মার্ক এবং কোম্পানির কোভিড-১৯ এর একটি এন্টিভাইরাল ওষুধকেও অনুমোদন দিয়েছে৷ সেইসাথে জাপানের শিওনোগি ড্রাগকেও অনুমোদন দিয়েছে।
মার্চের শেষ পর্যন্ত প্যাক্সলোভিড ক্রয়ের জন্য রোগীদের শুধুমাত্র ১৯৮ ইউয়ান (৩৮.৯০ মার্কিন ডলার) খরচ করতে হবে, যা এর মূল দামের মাত্র এক-দশমাংশ।
ফাইজার কোম্পানির এই প্যাক্সলোভিড ওষুধ এন্টিভাইরাল গবেষণায় কোভিডের ঝুঁকি বহুলাংশে কমিয়েছে।
কিন্তু চীনে কোথায় এ ওষুধ পাওয়া যাবে, কোন কোন মানুষ এ ওষুধ ব্যবহারের যোগ্য, সে সম্পর্কে কোন তথ্যই চীনা সরকার নাগরিকদের প্রদান করেনি। ফলে নাগরিকেরা কথিত বক্তব্যের উপরই নির্ভর করে।
সেইসাথে কোভিড-১৯ এর এক বিশাল জোয়ার চলছে চীনে। ফলে অনেক নাগরিকই বেআইনিভাবে এ প্যাক্সলোভিড ক্রয় করতে গিয়ে অতিরিক্ত মূল্য পরিশোধ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
চীনের গুয়াংডং প্রদেশের ইউনাইটেড ফ্যামিলি হেলথকেয়ার হাসপাতালে রোগীদেরকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ৬০০০ ইউয়ান এবং প্যাক্সলোভিড ক্রয় করতে ২৩০০ ইউয়ান প্রদান করতে হয়।
এ অতিরিক্ত মূল্যের কোনও ব্যাখ্যা হাসপাতালটি প্রদান করেনি।
চীনের স্বাস্থ্য তথ্য সংস্থা জানায়, আগামী পাঁচ মাসে কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য ৪৯০ লাখ ওষুধের প্রয়োজন পড়বে, যার মধ্যে শুধুমাত্র জানুয়ারিতেই প্রয়োজন পড়বে ২২০ লাখেরও বেশি ওষুধ।
ফাইজার ওষুধটি অনলাইনের মাধ্যমে ২১৭০ ইউয়ানেও কেনা যেতে পারে। তবে এটি সাধারণত কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়।
প্যাক্সলোভিডের অতিরিক্ত চাহিদা এবং চীনা সরকারের এ ব্যাপারে উদাসীনতার দরুণ অনেক নাগরিকই চড়া দামে বেআইনিভাবে এ ওষুধ কিনতে বাধ্য হচ্ছে। চীনের দক্ষিণাঞ্চলের হাইনান প্রদেশের বাসিন্দা চেন জুন এমনই একজন। তিনি তার ক্যান্সারে আক্রান্ত মা-বাবার জন্য ২০,০০০ ইউয়ান খরচ করে প্যাক্সলোভিড ক্রয় করেন।
আই. কে. জে/