লাইফস্টাইল ডেস্ক, সুখবর বাংলা: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে আগামী ১ অক্টোবর থেকে ৫ অক্টোবর চলবে ধুমধাম করে শারদীয় দুর্গোৎসবের আনন্দ ।
আর পূজা মানেই মজার মজার খাবার, নতুন পোশাক আর ঘুরাঘুরি। উৎসবের আমেজে খাদ্য তালিকায় নাড়ু ছাড়া পূজার মজা অসম্পূর্ণই থেকে যাবে।
মিষ্টি ও মুখরোচক এই খাবারগুলো সবার কাছেই সমান প্রিয়। প্রাচীন কাল থেকেই গ্রামে-গঞ্জে বাঙ্গালির উৎসবের খাবারের একটি জনপ্রিয় আইটেম ছিলো বিভিন্ন রকম নাড়ু। এই নাড়ু খুবই সুস্বাদু। তৈরি করাও খুব একটা কঠিন নয়।
চলুন তবে জেনে নেয়া যাক চার ধরনের নাড়ুর রেসিপি-
আফগানি ‘মালিদা’ নাড়ু
তৈরির উপকরণ: মাঝারি আকারের আটার রুটি আটটি, গুঁড় ১/৪ কাপ, এলাচ গুঁড়া আধা চা চামচ, বাদাম আধা কাপ, খেজুর কুচি করে কাটা ১/৪ কাপ, ঘি দুই টেবিল চামচ।
পদ্ধতি: প্রথমে রুটিগুলো ভালো করে হাতে ছিঁড়ে ছোট ছোট পিস করে নিন। এরপর একটি গ্রাইন্ডার বা ফুড প্রসেসরে দিয়ে রুটি আরো ছোট করে গুঁড়াগুড়ো করে নিন। এতে প্রায় তিন কাপ পরিমাণ রুটি হবে। এরপর বাদাম গ্রাইন্ডারে দিয়ে ভেঙে নিন।
চাইলে হামান দিস্তায় পিসে গুঁড়া করে নিতে পারেন। খুব বড় হবে না আবার মিহি করেও ভেঙে নিতে হবে না। একটি বড় বাটিতে বাদামগুঁড়া, খেজুর কুচি, এলাচ গুঁড়া এবং গুড় খুব ভালো করে নেড়ে মিশিয়ে নিন এবং আলাদা করে রাখুন।
একটি প্যানে করে অল্প আঁচে ঘি গলিয়ে নিন এবং অল্প গরম হলেই প্রসেস করে রাখা রুটি দিয়ে ভালো করে ভাজতে থাকুন। রুটিগুলো প্রায় ৫ থেকে ৭ মিনিট ভাজুন।
এতে করে রুটির গুঁড়া একটু মুচমুচে হবে। ভাজা হয়ে গেলে এবার বড় বাটিতে রাখা বাদাম গুড়ের মিশ্রণে রুটির মিশ্রণ দিয়ে দিন এবং হাত দিয়ে ভালো করে মেখে নিন।
যখন মিশ্রণ একটু ভেজা ভেজা হয়ে যাবে গুড়ের কারণে এবং আঠালো নরম ডো এর মতো তৈরি হবে তখন ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে লাড্ডুর মতো বল তৈরি করুন। কিছুক্ষণের মধ্যেই নরম ভাব কেটে গিয়ে একটু শক্ত লাড্ডুর মতো তৈরি হয়ে যাবে।
তিলের নাড়ু
উপকরণ: তিল এক কাপ, গুড় এক কাপ, পানি আধা কাপ, বাদাম ভাজা পরিমাণ মতো।
পদ্ধতি : প্রথমে তিল পরিষ্কার করে নিন ও তিল হালকা ভেজে নিন। এরপর চুলায় পানি ও গুড় দিন। মিশ্রণ ঘন হয়ে এলে তিল ও বাদাম দিয়ে নাড়তে থাকুন।
নামানোর সময় হলে নামিয়ে গোল গোল করে বানিয়ে ফেলুন গরম গরম প্রতিটি নাড়ু গরম গরম বানানোর সুবিধার জন্য একটি পাত্রে ঠাণ্ডা পানি নিয়ে মাঝে মধ্যে হাত ভিজিয়ে আবার নাড়ু বানাতে হবে।
এতে নাড়ু বানানোর সময় হাতে আঠা আঠা ভাব লেগে থাকবে না। ঠাণ্ডা হলে কাঁচের বয়ামে ভরে রাখলে নাড়ু ভালো থাকবে দীর্ঘদিন। প্লাস্টিক বয়ামে নাড়ু রাখলে অল্পদিনে গন্ধ চলে আসতে পারে ।
খেজুর গুড়ের নারকেলের নাড়ু
উপকরণ: নারকেল দুইটি, খেজুরের গুড় আধা কেজি, এলাচ গুঁড়া ১/৪ চা চামচ, তেজপাতা একটি, লবণ এক চিমটি, দারুচিনির টুকরা কয়েকটি।
পদ্ধতি: প্রথমে নারকেল কুরিয়ে নিন। এবার কোরানো নারকেল ও গুড় ভালো করে মিশিয়ে মিশিয়ে কড়াইয়ে দিন। কড়াই নন-স্টিকি হলে ভালো হয় তাহলে তলায় পোড়া লাগবে না।
এরপর দারুচিনি, তেজপাতা, এলাচ গুঁড়ো ও লবণ দিয়ে দিন এবং কড়াইয়ে ভাজতে থাকুন। সারাক্ষণ নাড়ুন যাতে তলায় লেগে না যায়। ভাজতে ভাজতে নরম ও আঠালো হয়ে গেলে চুলা থেকে কড়াই নামিয়ে নিন।
তারপর সহনীয় গরম থাকতে থাকতে হাতের তালুতে অল্প ঘি মেখে নারিকেল নিয়ে ছোট বলের মতো গোল আকৃতি দিন। ঠাণ্ডা হলে সংরক্ষণ করুন মুখবন্ধ পাত্রে। চাইলে চাল ভাজার মিহি গুঁড়োতে গড়িয়ে রাখতে পারেন।
চিড়ার নাড়ু:
উপকরণ: চিড়া আধা কেজি, খেজুরের গুড় ৮০০ গ্রাম, এলাচ গুঁড়া পাঁচটি, ঘি এক টেবিল চামচ।
পদ্ধতি: প্রথমে চিড়া ভেজে নিন। গুড়ের সাথে সিকি কাপ পরিমাণ পানি ও ঘি দিয়ে চুলায় দিন। ফুটে উঠলে এলাচ গুঁড়া ছেড়ে নাড়ুন। ঘন হলে চিড়া দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে চুলা থেকে নামিয়ে হাতে ঘি মেখে দ্রুত ঠাণ্ডা হওয়ার আগেই গোলাকার করে নাড়ু তৈরি করুন।
নাড়ু তৈরিতে একটু সময় ও শ্রমের বিষয় জড়িত থাকলেও নাড়ুর অমৃতের স্বাদ পূজাতে আরো বাড়তি কিছু আনন্দের মুহুর্ত যোগ করবে তা নিশ্চিত বলা যায় ।
এসি/
আরো পড়ুন:
পূজার সাজ, ষষ্ঠী থেকে দশমী