spot_img
24 C
Dhaka

১লা এপ্রিল, ২০২৩ইং, ১৮ই চৈত্র, ১৪২৯বাংলা

চট্টগ্রাম–সেন্ট মার্টিন ভ্রমণকে স্বপ্নময় করলো বিলাসবহুল জাহাজ এমভি বে ওয়ান

- Advertisement -

 

সুখবর ডেস্ক: চট্টগ্রাম–সেন্ট মার্টিন সাগরপথে উদ্বোধন হলো অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত দেশের প্রথম বিলাসবহুল প্রমোদতরি ‘এমভি বে ওয়ান’। গত বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারি, প্রথম যাত্রায় যাত্রী হতে বাস, ট্রেন ও উড়োজাহাজে চেপে ঢাকা থেকেও অনেক পর্যটক যান চট্টগ্রামে। জাহাজের কেবিন ও আসনে মোট ৫১১ জন পর্যটক প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম থেকে সাগরপথে সেন্ট মার্টিন যান। রাত পৌনে ১২টায় পতেঙ্গার ওয়াটার বাস টার্মিনাল থেকে তাদের নিয়ে যাত্রা শুরু করে ‘এমভি বে ওয়ান’।

জাপানের তৈরি জাহাজটি যখন কর্ণফুলী নদীর মোহনা পার হয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়ে, তখন পর্যটকদের আনন্দ যেন সীমা ছাড়িয়ে যায়। তারা ব্যাপক উৎসাহ–উদ্দীপনা নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে থাকা বড় জাহাজগুলো দেখতে থাকেন। মধ্যরাতে সাত–আটতলা উঁচু বড় বড় জাহাজকে দূর থেকে উঁচু ভবনের মতোই মনে হচ্ছিল। বড় বড় জাহাজের দৃশ্য দেখা শেষ না হতেই ওপরের ডেকে শুরু হয়ে যায় গানবাজনা। কেবিন ছেড়ে অনেকেই জাহাজের ডেকে এসে গান উপভোগ করেন।

শীত মৌসুম হওয়ায় এখন সাগরে ঢেউ নেই। ভারসাম্য থাকায় শিশু, নারী, কিশোর, বৃদ্ধনির্বিশেষে যাত্রীদের কারও জাহাজে ঘুরতে সমস্যা হচ্ছিল না। তবে নাবিকেরা জানালেন, ঢেউ থাকলেও জাহাজে ভারসাম্য রাখার ডানা আছে। তাই এটি হেলেদুলে চলে না। বাণিজ্যিক জাহাজের মতো ইঞ্জিনের শব্দও কানে বাজে না।

মধ্যরাতে ডেকের সোফায় বসে প্রথম যাত্রা উপভোগ করছিলেন সৈয়দ আকতার নামের এক পর্যটক। বললেন, ‘জীবনে ৪১টি দেশ ভ্রমণ করলেও আগে কখনো পর্যটকবাহী জাহাজে চড়া হয়নি। এবার সে সাধ মিটল। খুবই ভালো লাগছে।’
গান শোনা, আড্ডা আর ঘণ্টা তিনেকের এক ঘুমে কেটে গেল রাত। সকাল পৌনে সাতটার দিকে সাউন্ড সিস্টেমে প্রথম যাত্রা শেষ হওয়ার খবর শোনা গেল। প্রথম যাত্রায় লেগেছে সাত ঘণ্টা। সেন্ট মার্টিন জেটির এক কিলোমিটার দূরে নোঙর করল জাহাজটি। নাবিকেরা জানান, সেন্ট মার্টিন জেটিতে গভীরতা কম থাকায় এক কিলোমিটার দূরেই নোঙর করতে হয়েছে। সেখান থেকে আরেকটি ছোট জাহাজ ১০ মিনিটে যাত্রীদের জেটিতে নিয়ে নামাল।

এরপর ঘণ্টা পাঁচেক দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন ঘুরে দুপুর সোয়া ১২টায় যাত্রীরা আবার জাহাজে উঠলেন। এবার দিনের বেলায় সাগরে ভ্রমণ। দিগন্তবিস্তৃত নীল আকাশ দূরে সমুদ্রের নীল জলরাশিতে যেন মিশে গেছে। শান্ত সাগরের বুক চিরে জাহাজটি চট্টগ্রামের দিকে ছুটছে, আর পর্যটকেরা নীল জলরাশি, মাছ ধরার ট্রলার থেকে জাল ফেলার দৃশ্য দেখছেন।

জাহাজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাশুক হাসান আহমেদ বললেন, দেশের পর্যটকেরা এই প্রথম ক্রুজে পর্যটনের স্বাদ উপভোগ করলেন। ব্লু ইকোনমি বা নীল অর্থনীতিতে এই পর্যটন বড় অবদান রাখবে।

ভাড়া ও সুযোগ–সুবিধা

এই জাহাজে সাশ্রয়ী প্যাকেজ হলো সর্বনিম্ন জনপ্রতি ৩ হাজার ও ৪ হাজার টাকা। চেয়ারে বসে যাওয়া এবং আসার ভাড়া এটি। সবচেয়ে দামি প্যাকেজ হলো দুজনের শয্যার ভিভিআইপি কেবিন। ফিরতি টিকিটসহ সেটির ভাড়া ৫০ হাজার টাকা। এরপরে রয়্যাল প্যাকেজ ৪৫ হাজার এবং প্রেসিডেনশিয়াল প্যাকেজ ৩০ হাজার টাকা। চার শয্যার ফ্যামিলি কেবিনের ভাড়া ৫০ হাজার টাকা। এর বাইরে ফিরতি টিকিটসহ একজনের শয্যার ভাড়া ১০ হাজার টাকা। যাওয়া–আসা ছাড়াও একপথের টিকিট আছে। সে ক্ষেত্রে ভাড়ার হার ফিরতি টিকিটের অর্ধেকের কাছাকাছি।

সাইফুল ইসলাম নামে জাহাজের এক যাত্রী জানালেন, কেবিনের সুবিধা থাকলেও ভাড়া বেশি। জাহাজটিতে খাবারেও বৈচিত্র্য আনতে হবে।

চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি এত দিন সেন্ট মার্টিন যাওয়ার সুযোগ ছিল না। সড়কপথে প্রথমে চট্টগ্রাম থেকে টেকনাফ এবং সেখান থেকে নৌপথে সেন্ট মার্টিন যেতে হতো। সব মিলিয়ে ২৮২ কিলোমিটার দূরত্ব যেতে সময় লাগে কম–বেশি আট ঘণ্টা। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বাস ও নৌযান মিলে ভাড়া গুনতে হয় আসা–যাওয়াসহ জনপ্রতি ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা। আর সাগরপথে চট্টগ্রাম থেকে ২৩৬ কিলোমিটার দূরে সেন্ট মার্টিন যেতে ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হবে না বলে জানালেন এমভি বে ওয়ান জাহাজের কর্মকর্তারা।

- Advertisement -

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফলো করুন

25,028FansLike
5,000FollowersFollow
12,132SubscribersSubscribe
- Advertisement -

সর্বশেষ