spot_img
23 C
Dhaka

২২শে মার্চ, ২০২৩ইং, ৮ই চৈত্র, ১৪২৯বাংলা

চট্টগ্রামে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরলেন এক পরিবারের ৫ জন

- Advertisement -

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাবার করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর একে একে স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েও এই রোগে আক্রান্ত হয়। ছয়জনের পরিবারে বাকি ছিল শুধু সাড়ে তিন বছরের ছোট মেয়েটি।

ওই পরিবারের কর্তা এখন সুস্থ হয়ে রোজাও রাখছেন। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন তার স্ত্রী-সন্তানরাও। ছোট্ট মেয়েটিও ফিরেছে ঘরে। এখন তাদের মাঝে বিরাট বিপদ থেকে বেঁচে যাওয়ার স্বস্তি।

এই ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রাম নগরীর সাগরিকা এলাকার বাসিন্দা ওমর আলীর পরিবারে। একটি পোশাক কারখানায় কমার্শিয়াল অ্যাসিট্যান্ট হিসেবে কর্মরত ওমর আলীর করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় গত ৮ এপ্রিল। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। তার স্ত্রী এবং ছেলে-মেয়েরাও সেখানেই চিকিৎসা নেন।

সর্বশেষ গত সোমবার তার ১৮ বছর বয়সী মেয়ে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাসায় ফিরেছেন।

ওমর আলী বলেন, গত ২ এপ্রিল প্রথম তার জ্বর ও কাশির উপসর্গ দেখা দেয়। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করালে ৮ এপ্রিল পজিটিভ আসে।

“এরপর আমাকে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ের নমুনায় করোনাভাইরাস পজিটিভ আসার পর আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে।

“সবাইকে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসছিল তখন সাড়ে তিন বছর বয়সী ছোট মেয়েটা কোথায় থাকবে তা নিয়েও খুবই টেনশনে পড়ি। পুলিশের সহায়তায় তাকে মামার বাড়িতে রাখা হয়।”

পাহাড়তলী থানার ওসি ময়নুর রহমানের সহায়তায় ওমরের স্ত্রীর ভাইয়ের বাসায় ছোট মেয়েটিকে রাখা হয়।

হাসপাতালে চিকিৎসার ভয়ে মন ছোট হয়ে থাকলেও সন্তানদের জন্য ভালো হওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা কাজ করত উল্লেখ করে ওমর আলী বলেন, “দুনিয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু ছোট মেয়ের কথা বারবার মনে পড়ত। আল্লাহ আর হাসপাতালের ওপর নিজেদের ছেড়ে দিয়েছি।

“চিকিৎসক-নার্সদের সেবা আর আল্লাহর ইচ্ছায় আমাদের পরীক্ষায় পরে নেগেটিভ আসে।”

৪৫ বছর বয়সী ওমর আলী গত ২২ এপ্রিল সুস্থ হয়ে জেনারেল হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান। তার চার দিন পরেই ছাড়া পান তার স্ত্রী এবং ২৪ ও ২১ বছর বয়সী দুই ছেলে। আর সোমবার ছাড়া পেলেন মেয়ে। আগে থেকে সুস্থ ছোট্ট মেয়েটিকেও বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার নাথ বলেন, “তাদের পুরো পরিবার আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। প্রত্যেকেরই নমুনা পরীক্ষায় কয়েক দফা করোনাভাইরাস নেগেটিভ আসার পর তাদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তাদের পরিবারের সর্বশেষজন সোমবার হাসপাতাল ছেড়েছে।”

ওমরের বড় ছেলে নগরীর একটি কলেজে ডিগ্রি প্রথম বর্ষে পড়েন। মেজ ছেলে চট্টগ্রামের নাসিরাবাদের একটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অষ্টম সেমিস্টারের ছাত্র, আর বড় মেয়ে পড়েন একাদশ শ্রেণিতে।

পরিবারের সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরায় খুবই খুশি ওমর আলী, গত দুই দিন ধরে রোজা রাখছেন বলে জানালেন তিনি।

ওমর আলী বলেন, “আমরা এখন ভালো আছি। করোনাভাইরাস চিকিৎসার সময় সাহস হারালে চলবে না। হাসপাতালের চিকিৎসকরা যেভাবে বলে সেভাবে মানলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।”

পরিবারের সদস্যদের জন্য সবার কাছে দোয়া চান তিনি।

- Advertisement -

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফলো করুন

25,028FansLike
5,000FollowersFollow
12,132SubscribersSubscribe
- Advertisement -

সর্বশেষ