ডেস্ক রিপোর্ট, সুখবর ডটকম: চীনের শীর্ষ দুর্নীতি-বিরোধী সংস্থা প্রথমবারের মতো ঘুষ কেলেঙ্কারির নিয়ে মুখ খুলেছে। একসময়ের শক্তিশালী আর্থিক সংগঠন টুমরো গ্রুপ জড়িয়ে পড়েছে ঘুষ কেলেঙ্কারির মামলায়।
ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সেন্ট্রাল কমিশন ফর ডিসিপ্লিন ইন্সপেকশন (সিসিডিআই) সিসিটিভি বার্তার সাথে একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করে বিশদভাবে বর্ণনা করেছে যে কীভাবে টুমরো গ্রুপ স্থানীয় কর্মকর্তাদের ৪০০ লাখ ইউয়ান (৫৮.৯ লাখ মার্কিন ডলার) ঘুষ দিয়েছে।
পার্টির দুর্নীতি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিসিডিআই-এর দ্বিতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের ঠিক আগে, গত শনিবার রাতে এ নিয়ে “কিপ সাউন্ডিং দ্য বুগল” শিরোনামের চার পর্বের সিরিজের প্রথম পর্বটি প্রচারিত হয়েছে৷
চাইনিজ-কানাডিয়ান ব্যক্তিত্ব জিয়াও জিয়ানহুয়া দ্বারা প্রতিষ্ঠিত টুমরো থেকে ঘুষের ঘটনা, ৬৭ বছর বয়সী ঝাং জিনকির পতনের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সিসিডিআই তদন্তকারী ফেং জিংইউ জানান যে ঝাং সাংহাইতে এমন একজনের সাথে দেখা করেছিলেন, যিনিই আসলে টুমরো গ্রুপকে নিয়ন্ত্রণ করছেন এবং যার জন্যেই তিনি ২০০১ সালে ওয়েইফাংয়ের মেয়র হন। কিন্তু তিনি জড়িত ব্যক্তির নাম বলেননি।
শানডং-এ জন্মগ্রহণ করা ৫১ বছর বয়সী জিয়াও, ২০১৭ সালে একটি বিলাসবহুল হংকং হোটেল থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। গত বছর আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিচার করা হয় এবং সাংহাইয়ের একটি আদালত গত বছরের আগস্টে তাকে ১৩ বছরের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন৷
আদালত টুমরো গ্রুপকে ৫৫০ কোটি ইউয়ান জরিমানাও করেছে। পাঁচ বছরের তদন্তের পর চীনের বৃহত্তম ব্যক্তিগত মালিকানাধীন আর্থিক সাম্রাজ্য ভাঙার ঘটনা চীন এবং তার বাইরের আর্থিক প্রতিষ্ঠানদেরকে হতবাক করেছে।
বৈঠকের মাত্র ১৭ মাস পরে, ঝাং ব্যাঙ্ক অফ ওয়েইফাং-এর ৭০ শতাংশ মালিকানা টুমরো গ্রুপে স্থানান্তর করেন।
টুমরো গ্রুপ ওয়েইফাং গ্র্যান্ড হোটেলের নিয়ন্ত্রণ ঝাং-এর দীর্ঘদিনের মধ্যস্থতাকারী জিয়াও ওয়েই-এর কাছে হস্তান্তর করে এবং তথ্যচিত্র অনুসারে জিয়াও-এর অন্যান্য সম্পত্তি উন্নয়ন প্রকল্পে কাজে লাগানো হচ্ছে।
গত এক দশকে টুমরো গ্রুপের দ্রুত সম্প্রসারণের রহস্য ছিল রাষ্ট্রীয় সংস্থার দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃস্থানীয় অফিসারেরা এবং ঝাং জিনকি তাদের মধ্যে একজন।
টুমরো গ্রুপ এখন ধ্বংসের পথে এবং যেসব সরকারি কর্মকর্তারা এ সংস্থাকে সাহায্যের ক্ষেত্রে জড়িত ছিল তারাও তাদের কর্মফল ভোগ করছে।
ঝাং, ২০১৯ সালের নভেম্বরে পাবলিক অফিস থেকে অবসর নেন। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাকে তদন্তের অধীনে রাখার পর প্রায় দুই বছর ধরে তিনি বিচারের জন্য অপেক্ষা করছেন।
প্রাক্তন শীর্ষ পুলিশ প্রধান ফু জেনহুয়ার অপরাধের তথ্যচিত্রসহ প্রমাণ পেশ করা হয়। প্রাক্তন উপ-জননিরাপত্তা মন্ত্রী এবং বিচার মন্ত্রীকে সেপ্টেম্বরে মোট ১১৭০ লাখ ইউয়ান ঘুষ নেওয়ার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং তাদেরকে আজীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সাবেক উপ-জননিরাপত্তা মন্ত্রী সান লিজুনের নেতৃত্বে একটি রাজনৈতিক চক্রের মূল সদস্য হওয়ার জন্য ফু-এর বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ উঠছে।
আই.কে.জে/