আন্তর্জাতিক ডেস্ক, সুখবর ডটকম: অভূতপূর্ব ধুমধামের মধ্য দিয়ে ভারতের গুজরাট রাজ্য শাসনের সপ্তম দফার যাত্রা শুরু করল বিজেপি। আজ সোমবার দুপুরে গান্ধীনগরে রাজ্যের অষ্টাদশ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন ভূপেন্দ্র প্যাটেল। তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল আচার্য দেবব্রত। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে শপথ গ্রহণ করেন ১৬ জন মন্ত্রী।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অলোকিত করতে উপস্থিত ছিলেন ভূমিপুত্র কেন্দ্রীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অনুষ্ঠান উদ্যাপনে হাজির হয়েছিলেন বিজেপির বর্তমান সভাপতি জে পি নাড্ডা।
উপস্থিতি ছিলেন দলটির দুই সাবেক সভাপতি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও পরিবহন-মহাসড়কমন্ত্রী নীতীন গড়কড়ি। তাঁরা ছাড়াও কেন্দ্রীয় শীর্ষ মন্ত্রীরা অনুষ্ঠানে ছিলেন।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বিজেপি–শাসিত সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের। মহারাষ্ট্রে ক্ষমতাসীন জোটের সঙ্গী শিবসেনার মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেকেও অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট ছাড়া আর কোনো রাজনৈতিক দল ভারতের কোনো রাজ্যে টানা সাতবার নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসেনি। সেই নিরিখে নরেন্দ্র মোদির বিজেপি ছুঁয়ে ফেলল বামফ্রন্টের অনন্য কৃতিত্ব। পাশাপাশি ১৮২ আসনের এই বিধানসভায় ১৫৬ আসন জিতে তারা রেকর্ড গড়েছে।
এই চমকপ্রদ সাফল্য ধুমধামের সঙ্গে উদ্যাপনে বিজেপি চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি।
গান্ধীনগরে নতুন সচিবালয়ের কাছে হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়। পাশাপাশি বানানো হয় তিনটি পেল্লাই মঞ্চ। মাঝের মঞ্চ ছিল মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ গ্রহণের জন্য। অন্য দুটি মঞ্চের একটি নির্দিষ্ট ছিল রাজ্যের বিভিন্ন মঠ ও আশ্রমের ২০০ জন সাধুসন্তের জন্য। হিন্দুধর্মাবলম্বী এই সাধুদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
তিন মঞ্চের সামনে দর্শকদের মধ্যে ছিলেন বিভিন্ন জাত, ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ। তাঁদের মধ্যে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল পাটিদার, তফসিল জাতি, নারী ও আদিবাসীদের। তাঁরা এবারের ভোটে বিজেপিকে সমর্থনের ডালি উজাড় করে দিয়েছেন। এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিজেপি আগামী দিনের ভোটের রাজনীতি মোকাবিলায় ঐক্যের একটা ছবিও এঁকে দিল।
গুজরাটে টানা সপ্তমবার ক্ষমতাসীন হওয়ার সময়ই বিজেপি ক্ষমতাচ্যুত হয় হিমাচল প্রদেশে। উত্তর ভারতের এই পাহাড়ি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে ৬৮ আসনের মধ্যে ৪০টি জিতে শাসনভার আদায় করে নিয়েছে কংগ্রেস। ৩ স্বতন্ত্র বিধায়কও সমর্থন জানিয়েছেন কংগ্রেস সরকারকে।
উত্তর প্রদেশ ও উত্তরাখন্ডের মতো হিমাচল প্রদেশেও পরপর দুবার সরকার গড়তে বিজেপি কম চেষ্টা করেনি। তারা প্রধানমন্ত্রী মোদিকে দিয়ে ১৬টি জনসভা করিয়েছে। তবে ৯৪ শতাংশ হিন্দুপ্রধান এই রাজ্যে ‘মোদি–ম্যাজিক’ কাজে দেয়নি।
একই রকম পরিস্থিতি হয়েছে দিল্লি পৌরসভার ভোটেও। সেখানে বিজেপি হেরেছে। তাদের ১৫ বছরের মৌরসি–পাট্টার অবসান ঘটিয়ে পৌরসভার দায়িত্ব নিয়েছে আম আদমি পার্টি। প্রধানমন্ত্রী মোদির ‘ডাবল ইঞ্জিন’ তত্ত্ব কাজে লাগিয়ে আম আদমি পার্টি বিধানসভার পাশাপাশি দখল করেছে দিল্লি পৌরসভাও।
এই ‘জোড়া ব্যর্থতা’ ঢাকতে শুরু থেকেই বিজেপি প্রবল ঢক্কানিনাদের মাধ্যমে গুজরাট জয়কে তুলে ধরতে চেয়েছে। সাম্প্রতিক কালে কোনো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান ঘিরে এমন জাঁকজমক ও সর্বভারতীয় সমাবেশ আগে দেখা যায়নি।
এম/
আরো পড়ুন:
বিয়ের আসরে বরের কাছ থেকে গাধা উপহার পেলেন কনে