নিজস্ব প্রতিবেদক, সুখবর ডটকম: জীবন হলো এক অসীম শক্তির উৎস, এ না বস্তু; না চেতনা। তবে জীবনের বাস্তব গতি আছে, আছে তাল-বেতালের ছন্দ, আর আছে এর প্রকাশ। জীবনের বাস্তবতা মানুষ কেবল তার সহজাত সংজ্ঞা আর সম্মোহিত অনুভূতির মাধ্যমেই উপলব্ধি করতে পারে। জীবনের বাস্তবতা কেবল অনুভূতি বা উপলব্ধির বিষয়। আর সেই বাস্তব আর প্রগাঢ় উপলব্ধির কথাই অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় ‘অল্প টুকুই বাকি’ কবিতার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন গীতিকবি, চারণ কবি খোকন কুমার রায়।
এই কবিতার মাধ্যমে তিনি প্রকৃত সময়ের প্রতিচ্ছবি এঁকেছেন, যেখানে পঁচে যাওয়া, নৈতিক অবক্ষয়ের এই সমাজে মুখোশ পরা মানুষের ভিড়ে টিকে থাকাই কঠিন বাস্তবতা।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় আবৃত্তিকার শিমুল মুস্তাফার দরাজ কণ্ঠে আবৃত্তি, কবিতাটিকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে।
কবিতাটি শোনার জন্য ভিডিওতে ক্লিক করুন
অল্প টুকুই বাকি
খোকন কুমার রায়:
যতটুকুই আছি
এই ধ্বংসপ্রাপ্ত অংশটুকুই
আপন করে নাও
নয়তো এই নষ্ট সমাজের আস্তাকুঁড়ে
ছুড়ে ফেলে দাও, আপত্তি নেই কোনো!
এই যান্ত্রিক সভ্যতায় অসভ্য মানবিক বিপর্যয়ে
খণ্ড বিখণ্ড মন
কে আপন কে বা পর
যাচাইয়ে কেটে যায় দিন
সন্ধানী মন খুঁজে বেড়ায়
প্রকৃত আপন জন।
মুখগুলো মনে হয় মুখোশ পরে
ঘুরে বেড়ায় চারপাশ
চেনা চেহারাও অচেনা লাগে
হয়ত দৃষ্টি ভ্রম।
নিজেকেও এখন লাগে বেমানান
এই ভদ্রলোকের বেশে
কেন যেন ঝলমলে পোশাকের ভেতরে
একটা পঁচে যাওয়া দেহ মন
অনুভূত হয় সব সময়
নামী দামী সুগন্ধি ব্যবহার করেও
অস্বস্তিতে কাটে সারাক্ষণ।
নগ্ন হয়ে শুধু নগ্নতা খুঁজি
দুগ্ধদানরত মাতৃস্তনও হয় ভাইরাল
অমৃতসুধা পানরত শিশুটির তৃপ্তমুখ দেখি না
মাতৃক্রোড়ের সৌন্দর্য দেখি না
শুধু কামুক দৃষ্টি ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায়।
এ যেন এক নষ্ট সমাজের ঔরসজাত মানবকূল
সম্পদ আর লালসার সাম্রাজ্যে অধিষ্ঠানে ব্যাকুল।
প্রেমহীন মন চায় শুধু দেহ আস্বাদন
আয়োজিত আয়োজনে বহুবিধ গমন!
অল্পটুকুই আছি বাকি
নিঃশেষ হতে খুব বেশি দেরি নেই আর
পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখা-ও দিয়েছি বাদ
সংশয়ে মন, যাবে কি বাঁচা
বাকিটুকু, লয়ে সভ্য স্বপ্ন সাধ।
এসি/ আই.কে.জে/
আরো পড়ুন:
খোকন কুমার রায়ের কবিতা: অন্ধকারে বীজন