নিজস্ব প্রতিবেদক, সুখবর ডটকম: সুপারির উৎপাদন সবচেয়ে বেশি হয় উপকূলীয় জেলা বরগুনায়। এখানকার সুপারি আকারে ছোট হলেও খেতে মিষ্টি হওয়ায় বাজারে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় সুপারি সরবরাহ হয়ে থাকে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জেলার ৬টি উপজেলার গাছ থেকে কোটি টাকার সুপারি বিক্রি করা যাবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
পাথরঘাটা ও বরগুনা সদর উপজেলার একাধিক ব্যবসায়ী জানান, এবার প্রতিটি সুপারি দেড় থেকে ২ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। প্রতি কুড়ি (২২০টি) সুপারি ৩৫০-৪১০ টাকা পর্যন্ত বেচাকেনা হয়। গত দুই সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে সুপারির দাম বেড়েছে। ফলে হাসি ফুটেছে ব্যবসায়ী ও সুপারি চাষিদের মুখে। দুই পক্ষই লাভবান হওয়ায় দিন দিন এই অঞ্চলে বাড়ছে সুপারি বাগানের সংখ্যা। এবার সুপারি উৎপাদন কম হওয়ায় দাম বেশি। তবে আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় সুপারির আকার অনেকটা ছোট হয়েছে। বেশি দামে কিনলেও বিক্রিতে দাম কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অক্টোবর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বরগুনার পাথরঘাটা, আমতলী, তালতলী, বামনা, বেতাগী ও সদর উপজেলার প্রতিটি এলাকায় সুপারি কেনাবেচা হয়। এখন প্রতিদিনই স্থানীয় বাজারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে লাল রঙের পাকা সুপারি। মৌসুমের এ সময়ে অস্থায়ী সাপ্তাহিক হাটবাজারগুলো পুরোদমে জমজমাট থাকে। বিভিন্ন এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ীরা সাপ্তাহিক হাটবাজার থেকে সুপারি কিনে সংরক্ষণ করে, এবং অন্য মৌসুমে বিক্রি করে। আবার বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা বরগুনায় এসে সুপারি কিনে নানাপ্রান্তে নিয়ে যান। সুপারির দাম চাহিদার উপর নির্ভর করে অনেকাংশে। সাধারণত সুপারি কাঁচা, ভেজা ও শুকিয়ে বিক্রি করা হয়। আগের চেয়ে এখন বেশি মানুষ সুপারি খায়।
সদর উপজেলার ফুলঝুড়ির মীরার হাট এলাকার বাসিন্দা কাওসার সিদ্দিকী বলেন, বাপ-দাদারা বাগান রেখে গেছেন। নারিকেল-সুপারি বিক্রি করেই আমার সংসার চলে। সুপারির ওপর অনেক মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে। চারা রোপণের পর সাধারণত ৫ বছরে গাছে ফল ধরে। ১০-৪০ বছর পযর্ন্ত সর্বোচ্চ ফলন হয়। একটি গাছে ৩-৫টি ছড়া হতে পারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু সৈয়দ মো. জোবায়দুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর ৩০ শতাংশ বেশি সুপারির ফলন হয়েছে। সুপারি হলো এ অঞ্চলের কৃষকদের বাড়তি আয়ের একটি ফসল। মৌসুমী অর্থকরী ফসল উৎপাদনে উৎসাহিত করতে মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের তৎপরতায় এ জেলায় সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকেরা লাভবান হওয়ায় এলাকাভিত্তিক সুপারি চাষ ক্রমশ বাড়ছে। বসতভিটার চারদিকে, পরিত্যক্ত জমিতে, রাস্তার দুই ধারে সুপারি গাছ লাগিয়ে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। গত কয়েকবছর ধরে অনেক কৃষক বাণিজ্যিকভাবে সুপারি উৎপাদন করছেন।
এম/ আই. কে. জে/
আরো পড়ুন:
ভবন নকশায় লাগবে সিটি করপোরেশনের অনুমোদন : তৈরি হচ্ছে নতুন প্রবিধানমালা