খোকন কুমার রায়:
ছোট বেলায় “সুখী মানুষ” গল্পটি পড়েছিলাম, নাট্যকার মমতাজ উদ্দীন আহমদের লেখা। যেখানে ধনী মোড়লের অসুখ সারানোর জন্য সুখী মানুষের জামা প্রয়োজন ছিল কিন্তু সমগ্র এলাকা তন্ন তন্ন করে খুঁজেও সুখী মানুষের জামা পাওয়া গেলো না। অবশেষে জঙ্গলে এক কাঠুরেকে পাওয়া গেলো যিনি সারাদিন কাঠ কেটে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন এবং চরম সুখে আছেন। তার জামা চাইতে গেলে জানা গেলো তার কোনো জামা নাই।
গল্পটি এখনো মনে গেঁথে আছে। কারণ, বর্তমানে আমাদের সমাজে মনে হয় একটাও প্রকৃত সুখী মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমরা অনেকেই সুখে থাকার অভিনয় করে যাচ্ছি, প্রকৃত সুখী নই।
যারা দুর্নীতি, চুরি ও অবৈধ উপায়ে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তারাও বোধ করি সুখী হয়নি কারণ তাদের লোভ-আকাঙ্খার কোনো সীমা নেই। এইসব অবৈধ সম্পদ ভোগ করতে গিয়ে হয়তো তারা অনেকেই নানান বাজে নেশা ও অসামাজিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে অস্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন এবং পরবর্তী প্রজন্মকেও বিপথগামী করছেন। প্রকৃত সুখের সন্ধান এরা কখনোই পান না।
‘সুখ’ একান্তই মানসিক ও আত্মিক বিষয় যা অধিক সম্পদ ও দৌলত সর্বদা এনে দিতে পারে না।
বর্তমান মহা দুর্যোগ ও সঙ্কটে আহবান জানাচ্ছি, আপনাদের সম্পদের কিছু ভাগ অনাহারী দরিদ্র মানুষগুলোর জন্য ব্যয় করুন ও দুচোখ ভরে তাদের মুখের হাসি ও তৃপ্তি দেখুন এবং চরম আত্মিক সুখ লাভ করুন। চারদিকে সতর্ক নজর রাখুন, যেন কোনো মানুষ বা প্রাণী অনাহারে না থাকে, সাধ্যমতো সাহায্য করুন। নিশ্চই চরম আত্মতৃপ্তি লাভ করবেন যা জমে থাকা আত্মগ্লানি অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারে।
এখনই প্রকৃত সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর, এখনই সময় পরম সন্তুষ্টি লাভের।
লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক, সুখবর.কম।