spot_img
29 C
Dhaka

২৫শে মার্চ, ২০২৩ইং, ১১ই চৈত্র, ১৪২৯বাংলা

আমবাগানে পাখির বাসা: সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন বাগানমালিকরা

- Advertisement -

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুখবর ডটকম: রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের আমবাগানে পাখির বাসা ভাড়ার জন্য টাকা দিয়েছে সরকার। আজ শনিবার সকালে বন বিভাগের কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে যেসব আমবাগানে পাখির বাচ্চা হয়েছে, সেসব বাগানমালিককে অর্থ বরাদ্দের কথা জানান। এবার মোট পাঁচজন বাগানমালিক পাখির বাসার জন্য ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা পাচ্ছেন।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১ নভেম্বর পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে বন অধিদপ্তরকে খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের আমবাগানে শামুকখোল পাখির বাসার জন্য আমচাষিদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে এই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

যে পাঁচজন বাগানমালিক এই বরাদ্দ পাচ্ছেন, তারা হলেন খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের মঞ্জুর রহমান, সানার উদ্দিন, সাহাদত হোসেন, শফিকুল ইসলাম ও ফারুক আনোয়ার।

আজ সকালে আমবাগান পরিদর্শন করে পাখির অবস্থা দেখতে আসেন বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল ঢাকার বন সংরক্ষক মিহির কুমার, রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) জিল্লুর রহমান, রাজশাহী সামাজিক বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মেহেদীজ্জামান, বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রাহাত হোসেন, ওয়াইল্ড লাইফ রেঞ্জার হেলিম রায়হান ও বন্য প্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবীর।

এ সময় তারা বাগানমালিক ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এই কর্মকর্তারা জানান, অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে আমবাগানের মালিকদের এই টাকা দেওয়া হবে।

বেশ কয়েক বছর ধরে বর্ষাকালের শেষে শামুকখোল পাখিরা বাচ্চা ফোটানোর আগে খোর্দ্দ বাউসার এই আমবাগানে বাসা বাঁধে। গত বছর অক্টোবরের শেষে পাখিরা বাচ্চা ফুটিয়েছিল, কিন্তু বাচ্চা উড়তে শেখেনি—এ অবস্থায় আমবাগানের ইজারাদার বাগানের পরিচর্যা করতে চান। তিনি বাসা ভেঙে আমগাছ খালি করতে চান। একটি গাছের কিছু বাসা ভেঙেও দেন। স্থানীয় পাখিপ্রেমী কিছু মানুষ তাকে বাসা না ভাঙার জন্য অনুরোধ করেন। অন্তত যত দিন বাচ্চারা উড়তে না শেখে। তাদের অনুরোধে তিনি পাখিদের বাসা ছাড়ার জন্য ১৫ দিন সময় বেঁধে দেন। ১৫ দিনের মধ্যে বাসা না ছাড়লে পাখিদের বাসা ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দেন।

এ বিষয়ে গণমাধ্যমে অনেক খবর প্রকাশিত হয়। বিষয়টি আদালতের নজরে এনে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়ার আরজি জানান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রজ্ঞা পারমিতা রায়। আদালত স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ এক আদেশে বলেন, কেন ওই এলাকাকে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

ঘোষিত আদেশে বলা হয়েছে, এলাকাটি অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হলে বাগানমালিক ও বাগানের ইজারাদারের ক্ষতির সম্ভাব্য পরিমাণ নিরূপণ করে ৪০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে রাজশাহী জেলা প্রশাসক ও বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

এ নিয়ে জেলা প্রশাসন থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির সদস্যরা পাখির বাসার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ৩৮টি আমগাছ চিহ্নিত করে। তারা ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে। তাদের বিভিন্ন প্রস্তাবের মধ্যে ছিল পাখি থাকা সাপেক্ষে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, পাখিরা সব সময় একই জায়গায় বাসা বাঁধে না। কয়েক বছর পর তারা নতুন জায়গায় চলে যায়। এ ছাড়া পাখির বিষ্ঠায় স্থানীয় মানুষের কোনো ক্ষতি না হয়, এ ব্যাপারে নজর রাখতে হবে। পাখির অসুস্থতার ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিতে হবে; সর্বোপরি পাখি সংরক্ষণের জন্য স্থানীয় লোকজনের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করতে হবে।

- Advertisement -

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফলো করুন

25,028FansLike
5,000FollowersFollow
12,132SubscribersSubscribe
- Advertisement -

সর্বশেষ