ডেস্ক রিপোর্ট, সুখবর ডটকম: ‘অরেঞ্জ ক্রেট’ নামক ডেলিভারি প্রক্রিয়াকে ব্যবহার করে আফগানিস্তানে মার্কিন ডলারের নিরবিচ্ছিন্ন পাচারের তথ্য সাম্প্রতিককালে উদ্ঘাটিত হয়েছে। এ উদ্ঘাটন ইসলামাবাদের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে আলোড়ন তুলেছে। পাকিস্তানের নীতিনির্ধারকেরা মুদ্রা ও পণ্য পাচার বন্ধে নিয়োজিত কর্মীদের ব্যর্থতায় উদ্বিগ্ন।
সম্প্রতি পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার চোরাচালান পর্যালোচনা করার জন্য একটি জরুরি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের সভাপতিত্ব করার সময়, আন্তঃসীমান্ত চোরাচালান বন্ধ করতে এবং পাকিস্তানের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরির পরামর্শ দেন।
ইসহাক দার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদেরকে দোষীদের যত দ্রুত সম্ভব আইনের আওতায় আনার আদেশ দেন। এ বৈঠকের পর, কাস্টমস ২৪ ঘন্টার ভেতর ১ লাখ মার্কিন ডলার পাচার করতে যাওয়া এক ব্যক্তিকে আটক করে।
পাকিস্তানের কিছু সীমান্ত এবং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোকে আফগান চোরাকারবারিরা তাদের চোরাচালানের আড্ডায় পরিণত করেছে। কঠোর পরিশ্রমে উপার্জিত এই অর্থগুলো পাচার হওয়ায় তা দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। পাকিস্তানে চোরাচালানের ঘটনা ক্রমশ বেড়েই চলেছে।
পাক-আফগান সীমান্তে চোরাচালান নতুন কিছু নয়। গম এবং ইউরিয়া আফগানিস্তানে পাচার করা হচ্ছে যেখানে এই পণ্যগুলোর তীব্র ঘাটতি রয়েছে। আফগানিস্তান যে সমস্ত পণ্যগুলোর উপর নিয়ন্ত্রক শুল্ক চাপিয়েছিল সেগুলো এখন অস্ত্র বাণিজ্য চুক্তির (এটিটি) আড়ালে আফগানিস্তানে স্থানান্তরিত হচ্ছে৷
আবার সম্প্রতি আফগানিস্তান জানায় যে, পাকিস্তানি দালালেরা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ থেকে প্রাচীন মূর্তি এবং অন্যান্য নিদর্শন পাচার করে আফগানিস্তানের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধ্বংস করছে।
চোরাচালান কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা চোরাকারবারিদের দ্বারা হয়, যাদেরকে আফগান কর্মকর্তারা সহযোগিতা করছে।
এটি এখন সবাই জানে যে, অনেক প্রাচীন আফগান ধর্মগ্রন্থ এবং মূর্তি পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে পাচার হয়েছে।
সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কেন্দ্রভূমি আফগানিস্তানকে প্রায়শই এশিয়ার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তবে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং সহিংসতা এদেশের প্রাচীন গৌরব কেড়ে নিচ্ছে।
আফগানিস্তানের ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হলো বৌদ্ধধর্ম, এদেশে যার প্রভাব দশম শতাব্দীর আগ পর্যন্ত ছিল। আফগানিস্তানে বৌদ্ধ গুহা মন্দির তিনটি অঞ্চলে কেন্দ্রীভূতঃ জালালাবাদ, হাইবাক এবং বামিয়ান।