ডেস্ক রিপোর্ট, সুখবর ডটকম: পাকিস্তান এমন একটি দেশ, যে দেশ নিজেই সন্ত্রাসবাদের ‘সূতিকাগার’, সেই দেশই এখন আঞ্চলিক সন্ত্রাসী দল ‘তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান’ (টিটিপি) দ্বারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জর্জরিত এবং পুরো বিশ্বের কাছে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে নিজেকে জাহির করছে।
বছরের শেষ দিকে এসে পাকিস্তানে ঘটে গেছে এক ভয়াবহ ঘটনা। আটক ও জিজ্ঞাসাবাদের অধীনে থাকা ৩৩ জনের মতো ইসলামপন্থী জঙ্গী, নিরাপত্তা কর্মীদের কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে তাদেরকেই তিন দিনের জন্য জিম্মি করে রেখেছে। এ ঘটনায় জঙ্গীরা দুইজন নিরাপত্তা কর্মীকে হত্যা করে। গণমাধ্যম কর্মীদের মতে, এটি পাকিস্তান সরকার এবং আফগানিস্তান থেকে পরিচালিত জঙ্গিগোষ্ঠীদের মধ্যকার এক দুঃসাহসিক ঘটনা।
পাকিস্তানে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ বেড়েছে কিন্তু বাস্তবতা হলো মোশাররফ থেকে শাহবাজ শরীফ, সব নেতাই একবার সেনাসদস্যদের দ্বারা জঙ্গীদের শিকার করেছে, আবার তারাই রাজনৈতিক নেতৃত্ব ধরে রাখতে জঙ্গীদেরকেই সহযোগিতা করেছে। এ বছর সীমান্ত সন্ত্রাসে ১৪৫ জন বেসামরিক ও পুলিশ সদস্য নিহত হয়। খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বান্নুতে কাউন্টার টেরোরিজম ডিপার্টমেন্টের (সিটিডি) কার্যালয় জব্দ করা হয়েছে, যেখানে এ বছর সহিংসতার পরিমাণ ৪৮ শতাংশ বেড়েছে।
জাতিসংঘের নেতৃত্বে বিশ্ব সম্প্রদায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও সমর্থন জানিয়ে বলেছে পাকিস্তান সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে আরো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। পাকিস্তানের রাজনীতিবিদেরা নিজেরাই নিজেদের সাথে লড়াই করছে, সেনাসদস্যদের ঘৃণার চোখে দেখছে, যার ফলে দেশে সন্ত্রাসবাদের উত্থান মোকাবেলায় তারা নিজেরাই ব্যর্থ হয়েছে।
যৌথভাবে এবং পৃথকভাবে তারা আফগানিস্তানের তালেবান সন্ত্রাসীদেরকে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়েছে, যাদেরকে তারাই কাবুলে ক্ষমতায় ফিরতে সহযোগিতা করেছিল। আফগানিস্তানের সাথে কৌশলগত ক্ষমতা অর্জন এবং জঙ্গিবাদ শেষ করার উভয় চেষ্টাতেই তারা ব্যর্থ হয়েছে। পাকিস্তানের সীমান্তে ক্রমাগত সংঘর্ষে পাকিস্তান-আফগানিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাকিস্তান তাই এখন সীমান্তের দিকে মনোযোগ দিতে বাধ্য হচ্ছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেছেন, আফগানিস্তানের সাথে যুক্ত হওয়া ছাড়া পাকিস্তানের আর কোনও বিকল্প নেই। জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় পাকিস্তান এখন বিভ্রান্তিতে আছে।
এই সপ্তাহে ইসলামাবাদে একটি সম্মেলনে, নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং শিক্ষাবিদরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে যতবারই সরকার আলোচনায় নিযুক্ত হয়েছে, তারা জঙ্গিদের পুনরুত্থানের জন্য সেনাসদস্যদের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছে।
কেপি এবং বেলুচিস্তানে বর্তমান সহিংসতার ফলে সরকারের দুর্বলতাগুলো প্রকাশ্যে এসে গেছে। ফলে এখন আর তারা দেশের বাইরের সন্ত্রাসবাদ নিয়ে কথা বলছে না।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মুহম্মদ আমীর রানা জানান, পাকিস্তানে সন্ত্রাসবিরোধী নীতিকেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই ব্যবহার করা হচ্ছে। কেপিতে সহিংসতার ঘটনাটি ফেডারেল সরকার দ্বারা সমালোচিত হয়। কেপি এর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানগুলো মূলত সেনা নেতৃত্বাধীন ফেডারেলের নিয়ন্ত্রণে।