নিজস্ব প্রতিবেদক, সুখবর ডটকম: তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শুরু হচ্ছে আজ মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি)। এবার সরাসরি উপস্থিত হয়ে ডিসি সম্মেলন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে তিনি সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। তবে গত বছরের মতো এবারও জেলা প্রশাসক সম্মেলনের মূল ভেন্যু রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানা গেছে এসব তথ্য।
মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সংশ্লিষ্ট সচিব ও আট বিভাগীয় কমিশনার এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন। কমিশনার ও ডিসিরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একান্তে আলাপ ছাড়াও রাষ্ট্রপতির নৈশভোজে অংশ নেবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মাহবুব হোসেন স্বাগত বক্তব্য দেবেন।
আগামী বছরের শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া তিন দিনের ডিসি সম্মেলনই হবে সরকারপ্রধান তথা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বর্তমান ডিসিদের শেষ সাক্ষাৎ। ইতিমধ্যে প্রথা অনুযায়ী অনেক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সম্মেলনে উত্থাপনের জন্য। যেগুলো যে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের বিষয়, সেগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-সচিবের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে।
ডিসিদের জনপ্রিয় সব প্রস্তাবের মধ্যে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের রাজনীতি নিষিদ্ধ, আট বিভাগে আটটি কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, স্থানীয় হাসপাতাল পরিচালনা, তদারকির ক্ষেত্র বিস্তৃত করা, কিছু প্রশাসনিক ভবনের সংস্কার-উন্নয়ন, মোবাইল কোর্ট আইনের পরিধি বাড়ানো, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে পোষ্য কোটা বাতিলের প্রস্তাব, কারাবন্দিদের ভিডিওকলে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ ইত্যাদি।
জেলা ও উপজেলায় সরকারি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধানের পদ থেকে এমপিদের সরিয়ে সে পদে যেতে ডিসিরা প্রস্তাব করেছেন। ডিসি বা ইউএনওকে সভাপতি করে জেলা ও উপজেলায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন গোপালগঞ্জের ডিসি কাজী মাহবুবুল আলম। প্রস্তাবের পক্ষে তার যুক্তি: বিদ্যমান কমিটির পাশাপাশি ডিসি এবং ইউএনওর নেতৃত্বে স্বাস্থ্য কমিটি গঠিত হলে সার্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে নিয়মিত সমন্বয় ও মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব হবে।
পটুয়াখালীর ডিসি মো. শরিফুল ইসলাম বিভিন্ন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ কাজের প্রকল্প গ্রহণ, প্রাক্কলন প্রস্তুত, অনুমোদন, টেন্ডার প্রক্রিয়া ও বাস্তবায়নের সঙ্গে ডিসি বা তার প্রতিনিধি রাখার প্রস্তাব করেছেন।
খাসজমি বন্দোবস্তের কবুলিয়ত দলিল বাতিলের ক্ষমতা চেয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন জয়পুরহাটের ডিসি সালেহীন তানভীর গাজী।
ডিসির এলএ কনটিনজেন্সি খাতের ব্যয়ের আর্থিক ক্ষমতা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন ময়মনসিংহের ডিসি মোস্তাফিজুর রহমান।
স্থানীয় সার্ভে অ্যান্ড সেটেলমেন্ট অফিসকে কাজের সুবিধার্থে ডিসি অফিসের সঙ্গে সার্বক্ষণিক সমন্বয় করার প্রস্তাব দিয়েছেন মাগুরার ডিসি মোহাম্মদ আবু নাছের বেগ।
সরকারি প্রতিষ্ঠানের নামে অধিগ্রহণ বা বরাদ্দ করা জমি বন্দোবস্তের ক্ষেত্রে ডিসির অনুমতি নেওয়ার প্রস্তাব করেছেন গাজীপুরের ডিসি আনিসুর রহমান।
জেলায়-উপজেলায় এডিসি ও এসিল্যান্ডের সরকারি বাড়ি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব করেছেন কিশোরগঞ্জের ডিসি আবুল কালাম আজাদ।
বর্তমানে ডিসিদের সাধারণ কার্যাবলির মধ্যে ৬২টি বিষয় রয়েছে। প্রত্যেক বিষয়ে আবার রয়েছে একাধিক কমিটি-উপকমিটি। এসব কমিটির প্রধান ডিসি।
বাস্তবায়িত হয়নি গত বছরের ৬৫ সিদ্ধান্ত: গত বছরের ডিসি সম্মেলনে নেওয়া ২৪২টি সিদ্ধান্তের মধ্যে ১৭৭টি বাস্তবায়িত হয়েছে। এখনো অবাস্তবায়িত রয়েছে ৬৫টি, যা মোট সিদ্ধান্তের ২৭ শতাংশ। সম্মেলনে তিন ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৭২টি, যার মধ্যে ৫৮টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়েছে, যা শতকরা ৮১ শতাংশ।
মধ্যমেয়াদি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ১০৫টি। এর মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে ৭৭টি। দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৬৫টি। যার মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে ৪২টি সিদ্ধান্ত।
এম/ আই. কে. জে/
আরো পড়ুন:
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড: নেপথ্যের কুশীলবদের খুঁজতে কেন কমিশন নয়, হাইকোর্টের রুল