spot_img
24 C
Dhaka

১লা এপ্রিল, ২০২৩ইং, ১৮ই চৈত্র, ১৪২৯বাংলা

আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় মাছ

- Advertisement -

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুখবর ডটকম: ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে অন্যান্য রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য আগের মতো না থাকলেও শতভাগ রপ্তানিমুখী এই বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় মাছ। অদৃশ্য করোনাভাইরাসের কারণে তিন মাসে প্রায় ৬০ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের মাছ রপ্তানি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। তবে আশার কথা হলো- এখন আগের মতোই পুরোদমে মাছ নিচ্ছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। এর ফলে আখাউড়া স্থলবন্দরের রপ্তানি বাণিজ্যে আশা জাগাচ্ছে মাছ। ধীরে ধীরে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকায় মাছ রপ্তানির পরিমাণ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালের পর প্রথম আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় পণ্য রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১০ সালের ১৩ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে আখাউড়া স্থলবন্দর। এরপর থেকে এ বন্দর দিয়ে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার রড, সিমেন্ট, পাথর, প্লাস্টিক, মাছ, তুলা, ভোজ্য তেল ও খাদ্যসামগ্রীসহ অর্ধশত পণ্য রপ্তানি হতে থাকে ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায়। রপ্তানিকৃত এসব পণ্য আগরতলা থেকে সরবরাহ করা হয় ভারতের সেভেন সিস্টার খ্যাত সাতটি রাজ্যে। তবে গেল কয়েক বছর ধরে ধস নামতে থাকে রপ্তানি বাণিজ্যে।

সবচেয়ে বেশি চাহিদা সম্পন্ন পাথর এখন শিলং থেকেই সংগ্রহ করছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। রড-সিমেন্ট আমদানিও কমিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া নানা অজুহাত দেখিয়ে প্রায়ই বন্ধ করে দেয়া হয় মাছ আমদানি। অনেক সময় মাছ আগরতলা স্থলবন্দরে যাওয়ার পরও ভারতীয় ব্যবসায়ীরা সেই মাছ নিতে অনীহা প্রকাশ করেন। তখন বন্দরেই পচে নষ্ট হয় সব মাছ। এতে বিপুল অংকের টাকা লোকসান গুণতে হয় রপ্তানিকারক ব্যবসায়ী বা প্রতিষ্ঠানকে।

আখাউড়া স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মূলত ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে অন্য রাজ্যগুলোর সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ার ফলে গত তিন-চার বছর ধরে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন ভারতের বড় ব্যবসায়ীরা। আর ভারত থেকে তুলনামূলক চাহিদা সম্পন্ন পণ্য আমদানির অনুমতি না থাকায় ব্যবসায়ীরাও রপ্তানিতেই বেশি মনোযোগী। তবে রপ্তানির পরিমাণ কমে যাওয়ার পরও গড়ে প্রতিদিন এক থেকে দেড় কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হতো ভারতে। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর রপ্তানির পরিমাণ আরও কমে গেছে। এখন গড়ে প্রতিদিন অর্ধ কোটি টাকার ভোজ্য তেল, সিমেন্ট, মাছ, তুলা ও খাদ্যপণ্য যাচ্ছে ভারতে।

এদিকে, অন্যসব পণ্যের মতোই মাছ রপ্তানি কার্যক্রমেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে মহামারি করোনাভাইরাস। গত ২৪ মার্চ থেকে মাছ আমদানি বন্ধ করে দেয় ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। তিন মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর গত ২৯ জুন থেকে পুনরায় মাছ রপ্তানি শুরু হলেও রপ্তানির পরিমাণ আগের চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যায়। তবে গত এক সপ্তাহ ধরে রপ্তানির পরিমাণ আগের মতো হওয়ায় আশায় বুক বাঁধছেন ব্যবসায়ীরা।

আখাউড়া স্থলবন্দরের কয়েকজন মাছ ব্যবসায়ী জানান, ইলিশ ও চিংড়ি মাছ ছাড়া সব প্রজাতির মাছ ভারতে রপ্তানি করার অনুমতি রয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর আগে প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৬৫ টন মাছ রপ্তানি করা হতো। রপ্তানিকৃত এসব মাছের মধ্যে ৬০ শতাংশই তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস মাছ, বাকি ৪০ শতাংশ মাছ বিভিন্ন প্রজাতির। ছোট-বড় সব আকারের প্রতি কেজি মাছের গড় মূল্য ২.৫ মার্কিন ডলার। এখন রপ্তানি কার্যক্রম ধীরে ধীরে পূর্বের অবস্থার ফিরে যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে গড়ে প্রতিদিন ৬০ টন মাছ রপ্তানি হচ্ছে ভারতে।

আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজীব উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ”করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের বন্দরের রপ্তানি বাণিজ্য অর্ধেকে নেমে এসেছে। প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ ট্রাক পণ্য যাচ্ছে ভারতে। তবে গত কয়েকদিন ধরে আশার আলো দেখাচ্ছে মাছ। এ ছাড়া সামনে শীত মৌসুম হওয়ায় মাছের চাহিদা আরও বাড়বে।”

- Advertisement -

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফলো করুন

25,028FansLike
5,000FollowersFollow
12,132SubscribersSubscribe
- Advertisement -

সর্বশেষ