ডেস্ক রিপোর্ট, সুখবর ডটকম: জীবন রক্ষাকারী ওষুধসহ বিভিন্ন ওষুধের ঘাটতির বিষয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (পিএমএ)। ওষুধ প্রস্তুতকারকদের জন্য লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খোলার প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য পাকিস্তান সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে এ সংগঠন।
গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে, পিএমএ জানায় যে, তারা সরকারকে ইতিমধ্যেই জানিয়েছিল যে, ওষুধের কাঁচামাল আমদানির জন্য এলসি খুলতে ব্যর্থ হলে দেশে ওষুধের তীব্র ঘাটতি দেখা দিবে। দেশের নিরীহ মানুষদের প্রাণ বাঁচাতে অবিলম্বে সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করে পিএমএ।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তাদের কাঁচামাল আমদানির জন্য নতুন লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) ইস্যু করছে না দাবি করে ওষুধ প্রস্তুতকারীরা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সংকটের জন্য দেশের আর্থিক ব্যবস্থাকে দায়ী করেন।
অবনতিশীল অর্থনৈতিক সঙ্কট স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে খারাপভাবে প্রভাবিত করেছে, ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্প প্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী ওষুধ এবং অন্যান্য অস্ত্রোপচারের যন্ত্রের ঘাটতির মধ্যে তার সরবরাহ পুনরায় পূরণ করতে রীতিমতো লড়াই করছে।
চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং চেতনানাশকগুলো দীর্ঘস্থায়ী ঘাটতির সম্মুখীন, ফলে প্রধান হাসপাতালের ডাক্তারেরা অস্ত্রোপচার বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অভাব পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় ওষুধ বা অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস (এপিআই) আমদানির ক্ষমতাকেও প্রভাবিত করেছে।
ফলস্বরূপ, স্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারীরা তাদের উৎপাদন কমিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। হাসপাতালে রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকটের কারণে চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার করতে পারছেন না।
পাকিস্তানের ওষুধ উৎপাদন ব্যবস্থা আমদানিনির্ভর এবং প্রায় ৯৫ শতাংশ ওষুধের জন্য ভারত ও চীনসহ অন্যান্য দেশ থেকে কাঁচামালের প্রয়োজন হয়। ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় ডলারের ঘাটতির কারণে করাচি বন্দরে বেশিরভাগ ওষুধ প্রস্তুতকারকদের আমদানি করা সামগ্রী আটকে রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে ওষুধ উৎপাদন শিল্পপ্রতিষ্ঠান জানায়, ক্রমবর্ধমান জ্বালানী খরচ, পরিবহন খরচ এবং পাকিস্তানি রুপির তীব্র অবমূল্যায়নের কারণে ওষুধ তৈরির ব্যয় ক্রমাগত বাড়ছে।
সম্প্রতি, পাকিস্তান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (পিএমএ) পরিস্থিতি যাতে বিপর্যয়ের দিকে না যায় সেজন্য সরকারের হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে। তবে, কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ না নিয়ে এখনও ঘাটতির পরিমাণ নির্ধারণের চেষ্টা করছে।
পাকিস্তানের পাঞ্জাবের ওষুধের খুচরা বিক্রেতারা বলেছেন যে সরকারি জরিপ দলগুলো গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের ঘাটতি নির্ধারণের জন্য মাঠ পরিদর্শন করেছে। প্যানাডল, ইনসুলিন, ব্রুফেন, ডিসপ্রিন, ক্যালপোল, টেগ্রাল, নিমেসুলাইড, হেপামারজ, বুস্কোপ্যান এবং রিভোট্রিল ইত্যাদি ওষুধের ঘাটতি দেখা দিয়েছে দেশে।
জানুয়ারির শুরুতেই, পাকিস্তান ফার্মাসিউটিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (পিপিএমএ) এর কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান সৈয়দ ফারুক বুখারি বলেছিলেন যে, বর্তমানে ফার্মাসিউটিক্যাল উৎপাদনের প্রায় ২০-২৫ শতাংশ মন্থর গতিতে রয়েছে এবং এ অবস্থা চলমান থাকলে দেশে ওষুধের তীব্র ঘাটতি দেখা দিবে।
আই. কে. জে /