ডেস্ক রিপোর্ট, সুখবর ডটকম: ২০২২ সালে পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাক্ষী হওয়ার পর, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা সরকারের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ করেছে। বেশিরভাগ মানুষদের দাবি হলো বন্যা-পরবর্তী সময়ে তাদের খেয়াল রাখা হয়নি।
বেলুচিস্তানে এখনো দুর্যোগ প্রশমন এবং প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থার মৌলিক ত্রুটিগুলো প্রধান সমস্যা হিসেবে রয়েই গেছে। যদিও প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বাজেটের কমতি নেই, তবুও পরিকল্পনা, জবাবদিহিতা এবং দিকনির্দেশনার অভাব রয়েই গেছে।
বৃষ্টিপাতের পর আকস্মিক বন্যা এবং সেইসাথে অপর্যাপ্ত সরকারি সহযোগিতার কারণে গত বছর বেলুচিস্তানে ব্যাপক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়। পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের রিপোর্ট অনুযায়ী, বেলুচিস্তানের বন্যায় গত নভেম্বর পর্যন্ত, ৩৩৬ জন মারা গিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১৮৭ জন।
বন্যার কারণে ২২২০ কিলোমিটারেরও বেশি রাস্তা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে এবং ৩৫০,০০০ টি ঘরবাড়ি ভেসে গিয়েছে। বেলুচিস্তানে বসবাসকারী বন্যা ক্ষতিগ্রস্তরা শীতের তীব্রতার কারণে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে। বেলুচিস্তানের নাসিরাবাদ, জাফরাবাদ এবং সোহবাতপুর জেলা বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্যার ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও স্থানীয় জনগণের সরকারের প্রতি অভিযোগ এখনো রয়েই গেছে। তাদের বক্তব্য হলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও সরকার তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে সহযোগিতা করেনি।
তবে সরকারি কর্মকর্তাদের মতে, সরকার বেলুচিস্তানের ছোট কৃষকদের বিনামূল্যে গমের বীজ সরবরাহ করেছে। কর্মকর্তারা বলেছেন যে গমের বীজ চলমান মৌসুমে গম চাষে কৃষকদের জন্য সহায়ক হবে কারণ বন্যা অনেক জায়গায় বীজের মজুতগুলিকে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল।
কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন যে নাসিরাবাদ অঞ্চলের কিছু অংশ এখনও প্লাবিত রয়েছে এবং এ জল কমতে দীর্ঘ সময় লাগবে। তবে বিপুল পরিমাণ বন্যার পানিতে কৃষিজমি প্লাবিত হওয়ার খবরকে অতিরঞ্জিত করা হয়েছে, বলছেন কিছু কর্মকর্তা।
এদিকে, প্রাদেশিক সরকার অযৌক্তিক ব্যয় এবং ফেডারেল স্থানান্তর প্রকাশে বিলম্বের কারণে আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। বন্যা দুর্গতদের সাহায্য করার জন্য সরকারের কাছে সীমিত সম্পদ রয়েছে এবং তা থেকে সরকার কর্তৃক সামান্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সরকার স্পষ্টতই বিদেশী দাতাদের কাছ থেকে আরও সাহায্য আশা করেছিল, যা তারা পায় নি। শূন্যতা পূরণের জন্য সরকার স্থানীয় এনজিওগুলোকে বন্যার্তদের সাহায্য করার আহ্বান জানিয়েছে।
এনজিওগুলো নাসিরাবাদ বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করছে এবং মানুষকে সহায়তা প্রদান করছে। তবে অনেকেরই দাবি, সরকার এনজিওগুলোকেও নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। সেজন্য সাহায্য সংস্থার ত্রাণ কাজে বিলম্ব ঘটছে।