সুখবর প্রতিবেদক: রেলপথের যাত্রীদের টিকিট সংগ্রহে ভোগান্তি কমাতে ও প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে বহু আগেই অনলাইনের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। কিন্তু ই-টিকিটিং করার পরও ভোগান্তি রয়েই গেছে যাত্রীদের।
অধিকাংশ সময়ই দেখা গেছে, টিকিট চেকারদের ই-টিকিট সম্পর্কে ধারণা কম, ফলে তা চেক করার সময় যাত্রীদের তিক্ত অভিজ্ঞতাও কম নয়। যে মোবাইল নাম্বার থেকে টিকিট কনফর্ম করা হয়, সেই মোবাইল নাম্বারটি যদি ভ্রমণকারী নিজে ভ্রমণের সময় বহন করে তবে টিকিট চেকারকে কনফরমেশন ম্যাসেজটি দেখালেই হয়।
কিন্তু বিপত্তি ঘটে তখন, যখন সেই টিকিটে অন্য কেউ ভ্রমণ করে তখন। ফলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ই-টিকিটের সুফল পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। আর ই-টিকিট যদি কেউ ফেরত দিতে চায়, তাহলে তাকে কাউন্টারে যেতেই হবে, অনলাইনে ফেরত দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।
যাত্রীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, এতে ঝামেলা আরো বেশি। অনলাইনে টিকিট নেয়ার পর দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে সেই টিকিট ফেরত দেয়া কষ্টকর। ফলে অনলাইনেই টিকিট রিফান্ড করার দাবি যাত্রীদের শুরু থেকেই। এবার পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে মান্ধাতা আমলের ওই সিস্টেমের।
সদ্য রেলপথ মন্ত্রণালয়ে যোগদান করা অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে অনলাইনে টিকিট ফেরত এবং টাকা রিফান্ডের উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন।
তিনি লিখেছেন, ‘রেলে অনলাইনে টিকিট করলে তা ক্যান্সেল এবং রিফান্ডের জন্য যেতে হয় কাউন্টারে। টিকিট করলেন ঘরে বা অফিসে বসে, রিফান্ডের জন্য যেতে হবে কাউন্টারে। আপনি ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড দিয়ে অনলাইনে টিকিট করলেন, রিফান্ডের টাকা কয়েকদিন পর অটোমেটিক জমা হবে আপনার কার্ডের একাউন্টে। জগতভরা এখন এটাই নিয়ম।’
তিনি বলেন, আমাদের দেশে সরকারি-বেসরকারি সব বিমান কোম্পানিগুলো রিফান্ড দেয় অনলাইনে। রেলের ক্ষেত্রে যেতে হবে আপনাকে কাউন্টারে, হয়তো দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে। আমাদের অনেক বাস সার্ভিস এখন টিকিট এবং রিফান্ড অনলাইনে করে ফেলেছে। তার মানে অনলাইনে রিফান্ড কোনো রকেট সায়েন্স নয় বা শনি কিংবা নেপচুন গ্রহে মানুষ পাঠানোর মতো শক্ত কিছু নয়।
বাংলাদেশ বিমানের একাউন্টস শাখার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাথে বিশদ কথা বলে পুরো প্রক্রিয়া জেনে নিলাম। চাইলে তাঁরা এসে রেলের একাউন্টসে বিষয়টি পরিস্কার করে দিয়ে যেতে পারবেন।
মাহবুব কবির মিলন জানান, পূর্ব এফএ এন্ড সিএও মহোদয়ের সাথে কথা বলে তাঁদের একাউন্টস শাখাকে এ বিষয়ে মানসিক প্রস্তুতি রাখার জন্য অনুরোধ জানালাম। তিনি সব সাহায্য করবেন বলে জানালেন। বাকি কাজ বর্তমান সিএনএসবিডি’র। কোনো সমস্যা হবে না সেখানে। অফিস খুললেই রেলে অনলাইন রিফান্ডের কাজ শুরু হবে ইনশাআল্লাহ।
মাহবুব কবির মিলন বলেন, রেলওয়ে এখনও প্রচলিত হচ্ছে ১৮৯০ সালের পুরানো আইন দিয়ে। ফলে যুগের চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে না পেরে হোঁচট খাচ্ছে রেলওয়ে, ফলে কাঙ্ক্ষিত যাত্রীসেবা এখনও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
রেলের সমস্যাগুলো চিহ্নিতকরণ শুরু হয়েছে। যেগুলো দ্রুত সমাধান করা সম্ভব সেগুলোর তালিকা করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে রেলের আধুনিকীকরণে মাস্টার প্লান তৈরি করে কাজ এগিয়ে নেয়া হবে।